প্রায় দুই বছর ধরে সেন্সরে আটকে আছে ‘হৃদয়ে রংধনু’ ছবিটি। পরপর দুইবার সেন্সর বোর্ড থেকে রিভিউ দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি ছবিটি। ছবিটির প্রযোজক ছবিটি নিয়ে আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে আছেন। পরে উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি।
Advertisement
আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ছবিটির ব্যাপারে সেন্সর বোর্ডকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছে উচ্চ আদালত। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেন্সর বোর্ডের কোনো চিঠি বা তলব পাননি ছবিটির প্রযোজক।
এদিকে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় ঢাকা ক্লাবের এইচআরসিনহা লাউঞ্জে ‘হৃদয়ের রংধনু’ চলচ্চিত্রের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরবেন। ছবির প্রযোজক ও পরিচালক রাজিবুল হাসান রোববার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা ছবিটি দেখেন। এর ৯ মাস পর ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট ছবিটিতে পর্যটন শিল্পের হুমকিসহ আটটি জায়গায় সংশোধনী দিয়ে প্রযোজক ও পরিচালক বরাবর চিঠি দেয় সেন্সর বোর্ড। আটটি অভিযোগের মধ্যে দু-একটি অভিযোগ সংক্রান্ত দৃশ্য বা বিষয় ছবিতেই নেই। বাকি অভিযোগগুলো সংশোধন করে ব্যাখ্যাসহ এ বছরের ৮ সেপ্টেম্বর পুনরায় সেন্সর বোর্ডে ছবিটি জমা দিই।’
রাজিবুল হাসান আরও বলেন, ‘এরপর গত ১০ অক্টোবর ছবিটির আবার প্রিভিউ হয়। কিন্তু এর ফলাফল এখনো জানতে পারিনি আমরা। দ্বিতীয়বার প্রিভিউর মতামত পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা শুনেছি। ইতিমধ্যে আমি তথ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যাপারে চিঠিও দিয়েছি। কোনো খবর নেই তারপরও। ছবির গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে পর্যটন শিল্প। সেন্সর বোর্ডের অভিযোগ ছবিটি পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমাদের ছবিটি পর্যটন মন্ত্রণালয়ে আমরা দেখিয়েছি। তারা কোনো আপত্তি করেননি ছবিটির কোনো বিষয় নিয়ে। সেন্সর বোর্ডকে বিষয়টি অবগত করা হলেও তারা আটকে রাখে ছবিটি।’
Advertisement
রাজিব জানালেন, বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। পরে ছবিটির ব্যাপারে উচ্চ আদালত তাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। ৩০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে নির্দেশও দিয়েছে সেন্সর বোর্ডকে। কিন্তু তবুও সেন্সর বোর্ডের কোনো সাড়া মিলছে না। আমি ৩০ দিন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।
ছবির পরিচালক মনে করেন ছবিটির গল্পে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত নয়, বরং বিকশিত হওয়ার তথ্য আছে। তিনি বলেন, ‘দেশের ৫৪টি জেলায় আমরা ছবির শুটিং করেছি। কাজ শেষ হওয়ার পর প্রথমে পর্যটন করপোরেশনকে ছবিটি দেখাই। তারা ছবিটি দেখে খুশি হয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়ে এই ছবির জন্য সরকারের সেন্সর ফি মওকুফ করতে সহযোগিতা করেছে। সেই ছবিটি সেন্সর আটকে দিলো! খুব অদ্ভুত লাগলো ব্যাপারটা।’
এদিকে সেন্সর বোর্ডের সদস্য পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ছবিটির ব্যাপারে জানান, ‘আমি যতদূর জানি শিগগিরই ছবিটি সেন্সর ছাড় দেওয়া হবে। পর্যটন মন্ত্রনালয়ের অনুমতি পত্রটি দেখা হচ্ছে।’
পরিচালক জানান, দেশি-বিদেশি অনেক অভিনয়শিল্পী এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। তারা হলেন মিনা পেটকোভিচ (সার্বিয়া), শামস কাদির, মুহতাসিম স্বজন, খিং সাই মং মারমা প্রমুখ। ২০১৪ সালে ছবিটির শুটিং শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়েছে।
Advertisement
এমএবি/এলএ/জেআইএম