অর্থনীতি

ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান টেনে নামালো শেয়ারবাজার

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে (রোববার) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএস্ই) মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে পতনের মধ্যদিয়ে। মূলত সিংহভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণেই পুঁজিবাজারে এই পতন দেখা দেয়।

Advertisement

এদিন লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে একের পর এক ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমতে থাকে। ফলে নিম্নমুখী হতে থাকে সূচক। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রভাব অন্য খাতেও পড়তে থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকের বড় পতন হয়।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি পতন ঘটে অপর দু’টি সূচকেরও। সেই সঙ্গে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর পতন হয়।

আজ বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৮৮টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির দাম।

Advertisement

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৮৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে সূচকের ঊত্থান-পতনে ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা থাকে। ব্যাংক খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে দরপতন হলে সাধারণত শেয়ারবাজারেও দরপতন হয়। রোববারের লেনদেনেও তাই ঘটেছে।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ব্যাংক খাতের প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। আর্থিক খাতেরও একই অবস্থা। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণেই বাজারে এমন পতন দেখা দিয়েছে। তবে সার্বিক বাজারে এখন নেতিবাচক তেমন কিছু নেই। আশাকরি বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

এদিকে তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২১টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে। বিপরীতে বেড়েছে ৮টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। অপরদিকে তালিকাভুক্ত ২৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টির শেয়ারের দাম কমেছে। বিপরীতে বেড়েছে ৬টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির দাম।

Advertisement

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমন দরপতনে লেনদেনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। রোববার ডিএসইতে মোট ৪৯২ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৭৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসেবে আগের দিনের তুলনায় আজ মোট ৮৫ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার কম লেনদেন হয়েছে।

টাকার অংকে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির মোট ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ৪৭ লাখ টাকার। ২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- গ্রামীণ ফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, কেয়া কসমেটিক, আমরা নেটওয়ার্কস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ওসমানিয়া গ্লাস এবং অ্যাডভেন্ট ফার্মা।

এদিকে রোববার দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৫৯ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেন হওয়া ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির দাম।

এমএএস/এমএমজেড/এমএস