জাতীয়

হৃদয়ের যেন সরকারি চাকরি হয় : আকুতি মায়ের

আমার ছেলের ডান হাত নেই। সড়ক দুর্ঘটনায় হাত হারিয়েছে। আজ তার কর্ম করার ক্ষমতা নেই বললেই চলে। সে কিভাবে চলবে? তারও তো একটা ভবিষ্যৎ আছে। সরকার যেন তার ভবিষ্যৎ চলার মতো একটা ব্যবস্থা করে দেয়। সরকারের কাছে আমার এটুকুই চাওয়া।

Advertisement

এমনটাই বলছিলেন গোপালগঞ্জে বাসের পাশ ঘেঁষে ট্রাক যাওয়ার সময় ডান হাত হারানো বাসযাত্রী খালিদ হাসান হৃদয়ের মা শাহিদা বেগম। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন হৃদয়ের শয্যাপাশে বসে ছিলেন তা মা শাহিদা বেগম।

এ সময় হৃদয় তার মাকে বারবার বলছিলেন, মা আমি ভাত খাব। আমাকে ভাত এনে দাও। মা সান্ত্বনা দিয়ে বলছিলেন, বাবা একটু অপেক্ষা কর। কিছুক্ষণের মধ্যে ভাত দেবে। এ সময় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় হৃদয়ের মায়ের। তিনি বলেন, ডাক্তার তাকে ভাত দিতে বারণ করেছে। তাই তাকে ভাত দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আজ সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হৃদয়কে দেখতে এসেছিলেন। তিনি চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। হৃদয় সুস্থ হয়ে উঠলে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন। হয়তো তাকে একটা ব্যবস্থা করে দেবে মন্ত্রী। চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে খুব সুন্দর চিকিৎসা হচ্ছে। তাকে দিনে তিনটা ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে। ইনজেকশন দিতে দেরি হলে সে ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে। ইনজেকশন দেয়ার ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে আবার সুস্থ হয়ে যায়।

Advertisement

হৃদয়ের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, এখানে সবকিছু ভালো। চিকিৎসার কোন ত্রুটি হচ্ছে না। চিকিৎসার ব্যয় নিজেদের করতে হচ্ছে। হৃদয়ের চিকিৎসার বিষয়ে আলাপকালে ঢামেক অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান বলেন, হৃদয় এখন অনেকটা সুস্থ আছে। চিকিৎসার বিষয়ে কোনো ত্রুটি করছি না।

প্রসঙ্গত, হৃদয় টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের শ্রমিক। গত ১৭ এপ্রিল টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসে কাজ শেষে হৃদয় একটি বাসযোগে গোপালগঞ্জে যাচ্ছিল। বাসে উঠে জানালার পাশে বসে। তার হাতটি জানালার পাশে ছিল। গোপালগঞ্জের বেতগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিপরীত থেকে আসা একটি ট্রাক বাসটি ঘেঁষে যাওয়ার সময় হৃদয়ের ডান হাত কাটা পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় হৃদয়কে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তার বাবার নাম রবিউল ইসলাম এবং মা শাহিদা বেগম। বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের পুলিশ লাইন এলাকায়। বাবা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস বাসের সুপারভাইজার। হৃদয়ও ওই বাসের সহকারী।

জেএ/ওআর/আরআইপি

Advertisement