সরকারি চাকরিতে কোনো ধরনের বয়সের সময়সীমা না রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন।
Advertisement
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এই দাবি করেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে তা বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের তরফ থেকে একটি কমিশন গঠন করার দবিও তোলেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটা প্রথা চালু করা হয়। এরপর ২০০১ সালের জোট সরকার ক্ষমাতায় এসে আবার ১৯৭৫ সালের পরে যেরকম ছিল সেই রকম বৈষম্য তৈরি করে। জোট সরকারের আমলে চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা তো দূরে থাক চাকরির আবেদন ছিড়ে ফেলা হতো। বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পাওয়া যায় না, তারা যোগ্য নয়। এসব বলেও আমাদের বঞ্চিত করা হয়। এখন কোটা প্রথা বাতিল করে দিয়েছে। তাই মুক্তিযোদ্ধার ৩০ শতাং কোটা রাখার দাবি করছি।’
Advertisement
গণসমাবেশে বক্তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক প্রশাসন গড়ার স্বার্থে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার অন্য কোনো বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি পূর্বের ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার আহ্বান জানিয়ে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ আয়োজিত এই গণসমাবেশে নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সঠিক বাস্তবায়নে একটি কমিশন গঠনসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।
সংগঠনের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল না করা হলে ’৭১-এর পরাজিত শক্তি ডুগডুগি বাজাবে। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান-অপদস্থ করতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর একাটা বাতিলের ঘোষণার ফলে তারা আজ উল্লাসে মেতে উঠেছে।’
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা একটি অসাম্প্রদায়িক জঙ্গি মুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন স্বাধীনতা বিরোধীমুক্ত করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
Advertisement
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বলা হয়- মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পাওয়া যায় না। অথচ এখনো হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বেকারত্ব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাজেই কোটা বাতিলের সময় এখনও আসে নাই, এখনও মুক্তিযোদ্ধাদের হাজার হাজার সন্তান চাকরি পাননি, অনেক বেকার রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাব, কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন।’
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান শাহীনের পরিচালনায় এবং দফতর সম্পাদক আহমাদ রাসেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম জামাল উদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. কাজী সাইফুদ্দীন, শহীদ সংসদ সদস্য নুরুল হক হাওলাদারের কন্যা ও সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য জোবায়দা হক অজন্তা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক আসিবুর রহমান খান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসান, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন মৃদুল, প্রকৌশলী এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক রসিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য জোবায়ের আহমেদ, আব্দুর রশিদ মন্ডল, কক্সবাজার জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী হেলাল মোর্শেদ সোহাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সরকার, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার জুয়েল, ঢাকা মহানগরের সদস্য জিয়াদ মাহমুদ ও কামরুজ্জামান শিমুল।
এফএইচ/এমবিআর/জেআইএম