প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতা প্রদানে পৃথক একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা সেল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যেসব দেশে বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো অফিস নেই, কিংবা অফিস থাকলেও নিজস্ব ভবন নেই সেসব দেশে অফিস ও ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করবে এ সেল।
Advertisement
এ ছাড়াও সেলটি নিয়মিত এডিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা, এডিপি বা আরএডিপি প্রণয়নসহ গুরুত্ব কাজে নিয়োজিত থাকবে।
আগামী ২৩ এপ্রিল সোমবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিরা প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অনেক দেশেই বাংলাদেশের নিজস্ব অফিস নেই। তাই প্রবাসীরা যেমন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন না, ঠিক তেমনি তারা কোনো সমস্যায় পড়লে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সহজে সহযোগিতা পান না।
Advertisement
এ অবস্থায় প্রস্তাবিত এ সেলের মাধ্যমে ওইসব দেশে নিজস্ব অফিস ও প্রবাসীদের কথা শোনার জন্য ভবন স্থাপিত হলে তারা সহজেই সহযোগিতা পাবেন। আর বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর দারও উন্মুক্ত হবে।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের আলোকে যেসব দেশে বাংলাদেশের নিজস্ব চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেসব দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনকে স্বাগতিক দেশের নিজস্ব জমি থাকলে উক্ত জমিতে ভবন নির্মাণ, অন্যথায় জমি ক্রয় করে ভবন নির্মাণ কিংবা আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হলে জমিসহ তৈরি ভবন ক্রয়েয় প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিষয়টি পুনরায় আলোচিত হলে প্রধানমন্ত্রী দূতাবাসে ট্যান্সেরি কমপ্লেক্স নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ প্রেক্ষিতে এ প্রকল্পের কাজের গতি আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা সেল গঠনপূর্বক পদায়ন নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
Advertisement
প্রস্তাবনায় বলা হয়, বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিভিন্ন দেশে চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স নির্মাণ সংক্রান্ত চারটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যা ঐ সব দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ কর্তৃক বাস্তবায়িত হচ্ছে। এছাড়া চলমান প্রকল্পসমূহের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আরও ১০টি প্রকল্প ইতোমধ্যে প্রাধিকারভুক্ত হয়েছে যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত পরিকল্পনা সেল উল্লিখিত প্রকল্পগুলির সমন্বয় ও সার্বিক তত্ত্বাবধান সহজতর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এতে আরও জানানো হয়, প্রস্তাবিত পরিকল্পনা সেলের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে এডিপিভুক্ত প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা, এডিপি বা আরএডিপি প্রণয়ণ, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, নতুন প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ, আইএমইডি ও পরিকল্পনা কমিশনে মাসিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রতিবেদন প্রেরণ ও প্রকল্পসমূহ সরেজমিনে পরিদর্শন সম্ভবপর হবে।
প্রস্তাবিত সেলের জন্য জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত পদের বিবরণে বলা হয়, উপ-প্রধান একজন, সিনিয়র সহকারী প্রধান একজন, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক একজন, অফিস সহায়ক দুই জনসহ মোট ৬ জন।
এছাড়া অফিস সরঞ্জমাদির বিষয়ে বলা হয়েছে, কম্পিউটার তিনটি, প্রিন্টার তিনটি, স্ক্যানার একটি ও ফ্যাক্স মেশিন একটি। এতে আরও বলা হয়, সরকারি ব্যয়ে ফ্যাক্স ও আই.এস.ডি. স্থাপন সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০০৪ এর আলোকে প্রাপ্যতা অনুযায়ী প্রশাসনিক ক্ষমতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এমইউএইচ/এমএমজেড/এমএস