সিলেটের শিশু রাজনকে নির্যাতন করে হত্যার পরপরই সারাদেশ যখন প্রতিবাদ মুখর ঠিক তার পরপরই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে দুই শিশু নির্যাতনের সাজানো ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। আলোড়ন সৃষ্টিকারী গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে দুই শিশু নির্যাতনের ছবিটি প্রকাশ পাওয়ার পর তৎপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আর স্থানীয়দের সহায়তায় অবশেষে বেরিয়ে এসেছে মূল রহস্য। প্রকৃত অর্থে ছবিটি ছিল সাজানো কারসাজি। দুই শিশুর বাবা আর স্থানীয় সাংবাদিকের পরিকল্পনায় বাস্তবায়ন হয় এটি। তবে শিশু নির্যাতনের সাজানো ছবি সরবরাহ করে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করায় অবশেষে দুই সাংবাদিকসহ ৪ জনের নামে তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনের ২০০৬ এর ৫৭(১) ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলা নং ৪২। রোববার রাতে জেলার শ্যামনগর থানায় জয়নগর গ্রামের আব্দুল মাজেদ গাজীর ছেলে আনিছুর রহমান মামলাটি দায়ের করেন।মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে কলেজ শিক্ষক ও স্থানীয় দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার সাংবাদিক সামিউল মনির, গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ গাজীর ছেলে একই পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক রবিউল ইসলাম, গোপালপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান গাইনের ছেলে আব্দুর রশিদ ও জয়নগর গ্রামের আবুল গাজীর ছেলে ইউনুছ গাজী। তবে ইতোমধ্যে পত্রিকাটির কাশিমারি ইউনিয়ন প্রতিনিধি রবিউল ইসলামকে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ অব্যাহতি দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।বাদী মামলার বিবরণে উল্লেখ করেন, আসামিরা মিথ্যা ও আজগুবি তথ্য সরবরাহকারী ও সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী। তারা পরস্পরের সহায়তায় ১৭ জুলাই উপজেলার জয়নগর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মো. নাসিম (১০) ও ইসমাইল তরফদারের ছেলে মো.ইয়াছিনকে (৯) তরফদারের বাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে একটি আমগাছের সঙ্গে রশি ও শিকল দিয়ে পেঁচিয়ে বেঁধে ছবি তোলে। পরে ওই ছবি ২১ জুলাই স্থানীয় দৈনিক পত্রদূত পত্রিকা ও ওয়েব সাইটে প্রকাশ পায়। তারপর ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছবি তারা শিশু নির্যাতন শিরোনামে প্রচার করায় তা সারাদেশে আলোচিত হয়। এতে রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদাচ্ছের হোসেন জানান, অনুসন্ধানের পর বিষয়টি নিশ্চিত যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত শিশু নির্যাতনের ছবিটি সাজানো। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা রেকর্ড হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এমএএস/পিআর
Advertisement