‘আমিতো আর জ্যোতিষী নই। ঝাঁকড়া চুল নেই যে ঝাড়ি দিলেই আসামি টপ করে পড়বে।’ ঘটনার ২৩ দিন পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রামে যুবলীগকর্মী মহিউদ্দিন হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবাল গ্রেফতার না হওয়া প্রসঙ্গে এভাবেই নিজের দায় এড়াতে চেষ্টা করেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ময়নুল ইসলাম।
Advertisement
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুঠোফোনে ওসি মো. ময়নুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন,‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আটজন গ্রেফতার হয়েছে। হাজী ইকবালের ছেলে গ্রেফতার হয়েছে। আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর কী?’
একপর্যায়ে প্রতিবেদক হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবাল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এখানে মূল আসামি কে? সবাই মূল আসামি। আমিতো আর জ্যোতিষী নই। ঝাঁকড়া চুল নেই যে ঝাড়ি দিলেই আসামি টপ করে পড়বে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এর আগে বুধবার সকালে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-বন্দর) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, মামলাটি থানায়, তিনি এই প্রতিবেদককে এ বিষয়ে থানায় কথা বলার পরামর্শ দেন।
Advertisement
গত ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের পুনর্মিলনী নিয়ে একটি সভা চলছিল। সেখানে হাজী ইকবালের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন উপস্থিত হয়ে মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ উঠে। রাজনৈতিক বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে।
এই ঘটনায় হাজী ইকবালকে প্রধান আসামি এবং তার ভাই, সন্তান ও জামাতাসহ আরও ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় একটি মামলা করেন নিহত মহিউদ্দিনের বাবা।
গ্রেফতার আটজনের মধ্যে তিন আসামি আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবালের বিরোধীতা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন মহিদ খুন হন।
পুলিশ এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত আট আসামিকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে গত মঙ্গলবার ৩ এপ্রিল গভীর রাতে ঢাকার খিলক্ষেতে যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীর বাসায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি হাজী ইকবালের ছেলে আলী আকবরসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। তবে যুব মহিলা লীগের ওই নেত্রীর সহায়তায় দেয়াল টপকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হন হাজী ইকবাল।
Advertisement
আবু আজাদ/জেডএ/এমএস