আজ পহেলা শাবান। রমাজনের আগের মাসই শাবান মাস। ‘নিসফা শাবন’ বা শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতকে লাইলাতুল বারাআত বলা হয়। সে হিসেবে এবার আগামী ১ মে দিবাগত রাত-ই লাইলাতুল বারাআত বা শবে বরাত। অনেকে এ রজনীকে ভাগ্য রজনি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
Advertisement
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগি করতেন। হাদিসে প্রমাণ পাওয়া যায়, প্রিয়নবি এ মাস জুড়ে রোজা রাখতেন। খুব কম দিনই তিনি রোজা ছাড়তেন।
এ মাসে অত্যাধিক ইবাদত ও রোজা পালনের একটি অন্যতম কারণ হলো, এ মাসে আল্লাহর কাছে বান্দার আমলনামা পেশ করা হয়। আর দ্বিতীয় আরেকটি কারণ হলো এ মাসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীগণ তাদের ভাংতি রোজাগুলো পরিপূর্ণ করার সুবর্ণ সুযোগ পেতেন।
>> হজরত উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ (শাবান) মাসে বেশি বেশি রোজা রাখার কারণ জানতে চাইলাম। তিনি উত্তরে বললেন, ‘লোকেরা রজব ও রমজান এ দুই মাসের গুরুত্ব বেশি দেয় এবং রোজাও রাখে। কিন্তু মধ্যবর্তী এ মাসটিকে উপেক্ষা করে চলে। অথচ এ মাসেই বান্দার আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করা হয়।
Advertisement
আর আমার কামনা হলো- আমার আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করার সময় আমি রোজা অবস্থায় থাকি। এ কারণেই আমি শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখি। (নাসাঈ, আবু দাউদ)
>> মুহাদ্দিসিনে কেরামদের একটি মতামত ছিল এ রকম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত পবিত্র স্ত্রীগণের মধ্য থেকে যাদের রমজানের রোজা ছুটে যেতো। সে রোজাগুলো তারা সারা বছর কাজা করার সুযোগ পেতেন না এবং শাবান মাসেই ভাংতি রোজাগুলো কাজা করতেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদের সঙ্গে রোজা রেখেই মাসটি অতিবাহিত করতেন।
তাছাড়া প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাস জুড়েও বরকত ও কল্যাণের দোয়ার পাশাপাশি রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতেন এবং রমজান পর্যন্ত হায়াত লাভের কামনা করে এভাবে দোয়া করতেন-
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ তিনি আরো বলতেন- আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রামাদান ওয়া আইন্না আলা সিয়ামিহি ওয়া ক্বিয়ামিহি।’
Advertisement
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শাবান হচ্ছে আমার মাস, যে কেউ এ মাসে আমাকে সাহায্য করবে আল্লাহ তাআলা তার ওপর বিশেষ রহমত ও বরকত নাজিল করবেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেকে সাহায্য করা বলতে তাঁর সুন্নতের ওপর আমল করাকেই বুঝিয়েছেন।
যেহেতু তিনি শাবান মাসজুড়ে রোজা পালন করতেন, সুতরাং এ মাসে বেশি বেশি রোজা পালন এবং ইসতেগফার ও দরুদ শরিফ পাঠ করা উম্মতের জন্য জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা পালন ও ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। প্রিয়নবি আদর্শ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। রোজা অবস্থায় বান্দার আমলগুলো আল্লাহর পৌছানোর তাওফিক দান করুন এবং রমজানের রোজা পালনে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস