জাতীয়

চালক ২৯ লাখ, লাইসেন্স ১২ লাখ

সড়ক ভর্তি পরিবহন। লাখ লাখ পরিবহনে গতি কমছে দেশের সড়ক-মহাসড়কে। প্রতিদিন হাজারো পরিবহন যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের সড়ক পথে। কিন্তু কতজন চালক পেশাদার, কতজন চালক দক্ষ তার হিসাব নেই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে। বিআরটিএ’র এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করে বলেন, আমাদের কাছে যে হিসাব রয়েছে, তার বাইরেও অনেক পরিবহন এবং চালক রয়েছে, যাদের অনেকেরই লাইসেন্স নেই। বিআরটিএ’র তথ্যমতে জানা গেছে, দেশে মোট নিবন্ধিত হালকা ও ভারি গাড়ির সংখ্যা ২৯ লাখ ২০ হাজার ৮৩৬ জন। এসব গাড়ির লাইসেন্সধারী ড্রাইভারের সংখ্যা ১৭ লাখ। অর্থাৎ ১২ লাখ চালকই লাইসেন্সবিহীন। এই বিপুল সংখ্যক চালকের গাড়ি চালানোর কোনো অনুমতিই নেই। অথচ এই অপেশাদার চালকের কারণেই দেশে হাজার হাজার দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রতি বছর মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

Advertisement

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছর সড়ক দুর্ঘটনাতেই মারা গেছে সাত হাজার ৩৯৭ জন। আহত হয়েছেন ১৬ হাজার ১৯৩ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংগঠনটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চার হাজার ৯৭৯টি দুর্ঘটনা ঘটে। অপরদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ জানিয়েছে, ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৪৫। ২০১৬ সালে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৪৪ জন। গত বছরের তুলনায় ২০১৭ সালে নিহতের সংখ্যা ২৭.৩৬ শতাংশ বেশি।

যাত্রীকল্যাণ সমিতির দেয়া তথ্যমতে, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৬৯৭ জন, যার ৪৮ শতাংশের জন্য দায়ী যাত্রীবাহী বাস আর ৩৭ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রাক। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৫ সালে ৬ হাজার ৫৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৬৪২ জন নিহত ও ২১ হাজার ৮৫৫ জন আহত হন। আর ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫৫ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৯১৪ জন আহত হন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান বলেন, ১২ লাখ চালকের হাতে লাইসেন্স নেই। অথচ তারা প্রতিনিয়িত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামছে। অপেশাদার চালকের কারণেই সড়কে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। রাষ্ট্রের উদাসিনতার কারণেই এমনটি ঘটছে।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয় বিআরটিএ‘র চেয়ারম্যান মাশিউর রহমানের সঙ্গে। মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অপরদিকে বিআরটিএ’র রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক সাদেকুল ইসলাম মোবাইল রিসিভ করলেও তিনি লাইসেন্সের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

এএসএস/ওআর/এমএস