দেশজুড়ে

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : অর্থ-সম্পদে এগিয়ে জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাদের যে সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব দিয়েছেন তাতে অর্থ-সম্পদের দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম।

Advertisement

রোববার মনোনয়নপত্র বাছাইকালে রিটার্নিং অফিসার তাদের দুইজনসহ মোট ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম একজন ব্যবসায়ী। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ এলএলবি। তার সম্ভাব্য বার্ষিক আয় ৩০ লাখ টাকা। এ ছাড়া তিনি অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেড ও জেড আলম অ্যাপারেলস লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, তার নগদ অর্থের পরিমাণ ৭ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৮ টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৭১ টাকা। তার ব্যবসায়িক পুঁজি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৭ টাকা। অনারেবল টেক্সটাইল মিলে শেয়ার ৪৭ লাখ ৫০ হাজার ও জেড আলম অ্যাপারেলস লিমিটেডে শেয়ার ২০ হাজার টাকা। তার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ১০ লাখ টাকার। তার দুটি গাড়ি, ৩৫ ভরি স্বর্ণ, ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, আসবাবপত্র এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, একটি বন্দুক ও একটি পিস্তল রয়েছে যার মূল্য ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫০ টাকা।

Advertisement

এছাড়া স্থাবর সম্পত্তি কৃষি ১৪১৫ দশমিক ১৫ শতক, অকৃষি জমি ৩৩ দশমিক ৭১২৪ শতক। ৭ দশমিক ৪৩৭ শতক জমিতে একটি আবাসিক ভবন রয়েছে। অপর দিকে তিনি দায় দেখিয়েছেন জমি বিক্রির জন্য বায়না বাবদ ৮ কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে জয়দেবপুর থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা ছিল যা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। এছাড়া একই থানায় অপর একটি মামলা হলেও সে মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পান।

অপরদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার তার হলফনামায় দেখিয়েছেন- তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেছেন। তার ব্যবসা ও গৃহ সম্পত্তি থেকে বার্ষিক আয় ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় ৬৩ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ৫ লাখ ২২ হাজার ৯০০ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা থেকে আয় ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। তার নগদ অর্থ রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ৬০ লাখ ৪৯ হাজার ৬০১ টাকা। তার একটি গাড়ি রয়েছে যার মূল্য ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার নিজের স্বর্ণ রয়েছে ২১ তোলা। তার একটি পিস্তল, একটি শর্টগান রয়েছে এবং স্ত্রীর নামেও রয়েছে একটি একনালা বন্দুক। স্ত্রীর নামে নগদ রয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে রয়েছে ৫৮ হাজার ৫৪২ টাকা। স্বর্ণ আছে ৩২ তোলা।

হাসান উদ্দিন সরকারের স্থাবর সম্পত্তির মূল্য ৭৭ লাখ ৮৪ হাজার ১৮৮ টাকা। কৃষি জমি আছে ৫০০ দশমিক ৫৩১ শতক। যার মূল্য ৯৪ হাজার ৪৬৪ টাকা। সাড়ে ৭ শতক বাণিজ্যিক সম্পত্তিতে ৫টি দোকান রয়েছে। টঙ্গীতে ৯০ শতক জমিতে ৩২টি সেমিপাকা ঘর আছে যার বার্ষিক আয় ২৫ লাখ ৬২ হাজার ৮৪৯ টাকা। একটি একচালা টিনসেড ঘর যার বার্ষিক আয় ৩ লাখ টাকা। এছাড়া ২৯শ বর্গ ফুটের একটি চার তলা অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে কৃষি জমি রয়েছে ২০৮ দশমিক ৮৩৫ শতক। যার মূল্য ৬১ হাজার ৩১৯ টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে ৭০ শতাংশ, যার মূল্য ৬০ হাজার টাকা। বারইপাড়া ও ভাওয়ালগড় এলাকায় রয়েছে ২৭ শতক জমি যার মূল্য ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৭৫০ টাকা। বাদাম টঙ্গীতে সেমিপাকা ৩২টি ছাপড়া ঘর রয়েছে যার ভাড়া বাবদ আয় ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

হাসান উদ্দিন সরকার চেকের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করেছেন ২৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। তার নামে ঢাকার তেঁজগাও থানায় ২০১৫ সালে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে এবং ২০১৮ সালে টঙ্গী থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার মামলটি থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। টঙ্গী থানার মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

Advertisement

আমিনুল ইসলাম/আরএআর/আরআইপি