আমাদের ডিজিটাল জীবনকে প্রতিনিয়ত নজরদারি করা হচ্ছে। ফেসবুক তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা যে বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে তা হল অনলাইনে আমাদের সকল পদক্ষেপ নজরদারি করছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সামাজিক নেটওয়ার্ক। কিন্তু শুধু এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টই যে গোপনে সর্বদা আপনার কার্যক্রম অনুসরণ করছে তা নয়। আরও ডজন-খানেক কোম্পানি আমাদের ডিজিটাল ভুবনে ঘোরাফেরার নানা তথ্য সংগ্রহ করছে এবং সারাক্ষণ মনিটর করে চলেছে কয়েক ডজন কোম্পানি বা ট্র্যাকার। লোকজনের ডিজিটাল জীবনের বিচরণ ট্র্যাক করতে চাইলে নানান উপায় রয়েছে। খবর বিবিসির
Advertisement
অনেক মানুষই এ বিষয়ে সচেতন নয় যে কিভাবে তাদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে এবং কাদের এসব তথ্য দেখার ক্ষমতা আছে। যদি আপনি জানতে চান যে ইন্টারনেটে কে আপনাকে অনুসরণ করছে, তাহলে বেশিরভাগ ইউজারের জন্যই উত্তরটি হচ্ছে, সেটা যে কেউ হতে পারে।
সাধারণত যেসব ওয়েবসাইটে বেশি যাওয়া হয় এবং যেসব অ্যাপস সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো ব্যবহারকারীর সম্পর্কে তথ্য নিয়ে নিচ্ছে। ওয়েব ব্রাউজিং ইতিহাস নিবিড়ভাবে মনিটর করতে পারে এমন টুলসকে বলা হয় স্নুপিং আর্সেনাল।
গণহারে তথ্য সংগ্রহের এই অস্ত্রটি মানুষের কর্মকাণ্ডের ব্যাপক তথ্য মজুদ করে। যেমন কোন ধরনের ওয়েবসাইটে আমরা বেশি যাচ্ছি কিংবা কি ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করছি ইত্যাদি। কোনও ওয়েবসাইটের ডজন ডজন ট্র্যাকার থাকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে। একটি টুল হয়তো সাইটের মালিককে ট্রাফিক ভলিউম বা ব্যবহারকারীদের সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা দেবে। কিন্তু কোম্পানিগুলো অধিকাংশই তাদের ব্যবহারকারী কারা, বয়স কেমন, কোথায় থাকে, কি পড়ছে, কোন বিষয়গুলোতে আগ্রহ ইত্যাদি জানার জন্য এসব টুলস ব্যবহার করে।
Advertisement
২০১০ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক গবেষণায় দেখা যায় যে, আমেরিকার জনপ্রিয় ৫০টি ওয়েবসাইটের গড়ে ৬৪ ট্র্যাকার রয়েছে।
কেন এত দীর্ঘ সংখ্যা? কারণ এসব তথ্য তারা পণ্যদ্রব্য হিসেবে বিক্রি করতে পারে, বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে, এমনকি সরকারের কাছেও। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহের আরেকটি পন্থা হচ্ছে ফ্রি ইমেইল সার্ভিস থেকে তাদের ইনবক্স স্ক্যান করার মাধ্যমে, যেমন গুগলের জিমেইল। ইমেইল আদান-প্রদানের জন্য জনপ্রিয় জিমেইল।
গত জুনে গুগল কোম্পানি ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা এই ধরনের চর্চা বন্ধ করবে। বেশিরভাগ সময়ই এসব কাজ আমাদের কাছে দৃশ্যমান নয় কিন্তু ট্র্যাকারদের খুঁজে বের করা সহজ যদিও একেবারে প্রথম দিকে তাদের সন্দেহজনক মনে নাও হতে পারে।
কখনো কি কোনও পেজে লেখা দেখেছেন টুইট দিস কিংবা ফলো মি অন টুইটার? তাহলে নিশ্চয়ই সেটা কোনও ট্র্যাকার।
Advertisement
গতবছর টুইটার কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয় যে, তারা ডু নট ট্র্যাক ইনিশিয়েটিভ এ তাদের সমর্থন তুলে নিয়েছে। ওই ইনিশিয়েটিভ ছিল ইন্টারনেটে ব্যবহারকারীদের অনলাইন গতিবিধি অনুসরণ করা থেকে বিরত রাখার একধরনের পলিসি। কোনও কোনও ট্র্যাকার আঠার মতো লেগে থাকে এবং সর্বদা ইন্টারনেটে কার্যকলাপ নজরদারি করে।
এএ