মতামত

বেপরোয়া চালকদের রুখবে কে?

রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় হাত হারানো তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব হাসানের ক্ষত না মুছতেই এবার বেপরোয়া বাসের চাপে পা থেঁতলে গেল এক পথচারী নারীর। রাজধানীর বাসচলাচল কতটা বিপদজনক এবং বেপরোয়া সেটি বলার অপেক্ষা রাখেনা। বার বার নানা দুর্ঘটনায়ও কারো টনক নড়ছে না। কিন্তু জননিরাপত্তার স্বার্থে এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। আনন্দ সিনেমা হলের সামনে বাস থেমে যাত্রী ওঠা-নামা করে। সেখান সড়কে উঁচু বিভাজক আছে। ওই বিভাজকের ওপর যাত্রীরা দাঁড়ান। সকাল নয়টার দিকে এক নারী সড়ক থেকে উঁচু বিভাজকের ওপর উঠতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বেপরোয়া গতির নিউ ভিশন পরিবহনের একটি বাস সড়ক বিভাজক ঘেঁষে এগিয়ে আসে। বিভাজক ও বাসের মাঝে ওই নারীর ডান পা চাপা খায়। এতে তাঁর ডান পায়ের হাঁটু সংলগ্ন অংশ থেঁতলে যায়। বাস ও বাসের চালককে আটক করা হয়েছে। আহত রুনি মাস্টার্স সম্পন্ন করে এমবিএ করেছেন। এরপর র‍্যাংগস প্রপার্টিজে চাকরি করছিলেন। আজ অফিসের যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। তাঁর ডান হাঁটুর ওপরের মাংস ছিড়ে গেছে। হাসপাতালে আনার পর দুই ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে রুনিকে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement

গত ৩ এপ্রিল দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের দিক থেকে ফার্মগেটমুখী একটি দ্বিতল বিআরটিসি বাস সার্ক ফোয়ারার কাছে পান্থকুঞ্জের পাশে সিগনালে থেমে ছিল। পরে একই দিক থেকে আসা স্বজন পরিবহনের একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দোতলা বাসের পাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় যাত্রী রাজিব হাসানের ডান হাত দ্বিতল বাসের সঙ্গে লেগে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন হাতটি দ্বিতল বাসের সঙ্গে ঝুলছিল। আশপাশের লোকজন তাৎক্ষণিক রাজিবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তার হাতটি জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। তার অবস্থায়ও আশঙ্কাজনক।

রাজধানীতে বাস চলাচল কতটা বেপরোয়া তার উদাহরণ যেন এই ঘটনাগুলো। প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনার বলি হচ্ছে অনেক মানুষ। এর অন্যতম কারণ যানবাহনের বেপরোয়া গতি। খোদ রাজধানীতে যেখানে যানজট লেগেই আছে সেখানেও সামান্য সুযোগ পেলেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে চালকরা। যাত্রী-ওঠা নামার অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণেই মূলত এই পাল্টাপাল্টি। এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। অপরাধীর শাস্তি না হলে অপরাধ বন্ধ করা কঠিন। অভিযুক্ত চালকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে না ধরনের ঘটনা রোধ করা যাবে না।

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক কথা হয়েছে। এবার সময় এসেছে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার। গণপরিবহন নিশ্চিত এবং যাত্রীস্বার্থ রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো শৈথিল্য কাম্য নয়।

Advertisement

এইচআর/আরআইপি