কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাদ্য শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করার জন্য সহজ ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, ট্যাক্স হলিডে, রফতানির বিপরীতে আর্থিক প্রণোদনাসহ একগুচ্ছ সুবিধা দিতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের খাদ্য সংশ্লিষ্ট কৃষিজ পণ্যের অবস্থা এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের বিকাশ: সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক পথনকশা তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণায়। পথনকশাটি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে।
Advertisement
বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, তৈরিকৃত পথনকশায় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে- কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাদ্য শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করার জন্য সহজ ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, ট্যাক্স হলিডে, রফতানির বিপরীতে আর্থিক প্রণোদনা ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হবে। খাদ্যের কাঁচামাল হিসেবে বিবিধ প্রাথমিক ও সেমি-প্রসেসড কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে ‘গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিস’ অনুসরণ করা হবে। পাশাপাশি খাদ্যের মান নির্ধারণ এবং নির্ধারিত মানের খাদ্য উৎপাদন ও বিপিণন নিশ্চিত করার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য মানের গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করা হবে।
Advertisement
এছাড়াও সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাদ্য শিল্পের উন্নয়ন সরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সহায়ক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। সরকারি উপযুক্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সংস্থার প্রয়োজনীয় সক্ষমতা সৃষ্টিপূর্বক বিধি বিধানগতভাবে খাদ্য শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণর জন্য দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। আগ্রাসী বিপণন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের বিকাশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ভূমির উৎপাদন সক্ষমতা ও জলজ পরিবেশ নিশ্চিতপূর্বক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের চাহিদানির্ভর কৃষিজ পণ্য উৎপাদন এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে সরবরাহ করা। প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে কৃষিজ পণ্যের একক প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রি ও পোস্ট হার্ভেস্টিং পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে কাঁচামালের অপচয় রোধপূর্বক প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে কাঁচামালের সরবরাহ এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতকরণ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরে চাহিদা পূরণের মাধ্যমে আমদানি প্রতিস্থাপক হিসেবে ভূমিকা পালনসহ কর্মসংস্থান সৃজন এবং রফতানি সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সংশ্লিষ্ট খাত একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। পথনকশাটি বাস্তবায়িত হলে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বিপণনে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা সম্ভব হবে। ফুড প্রসেসিং বিশেষ করে এগ্রোপ্রসেসিং ফুডের ক্ষেত্রে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহৃত হওয়ায় এক্ষেত্রে প্রায় শতভাগ মূল্য সংযোজন হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে তা বাংলাদেশি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবে।
এমইউএইচ/বিএ
Advertisement