দেশজুড়ে

পাহাড়ে উৎসবের রং

উৎসবের রং এখন পাহাড়ে। বৈসাবি (বৈসুক সাংগ্রাই বিজু) ঘিরে রাঙ্গামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় নামছে আনন্দধারা। বইছে উৎসবের জোয়ার। একাট্টা হচ্ছে আবহমান বাংলার চিরাচরিত ঐতিহ্যবাহী বৈশাখি বা নববর্ষ উৎসব। উৎসব আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ। কেনাকাটাও শেষ প্রায়। এখন পালা উদযাপনের। বৃহস্পতিবার পাহাড়িদের ঘরে ঘরে শুরু হচ্ছে তিন দিনের উৎসব।

Advertisement

উৎসবের মূলদিন শুক্রবার। এদিন ঘরে ঘরে যার যা সামর্থ্য তা নিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করা হবে। বিশেষ করে আয়োজন থাকবে বিশেষ সবজি তরকারি পাজন আর মিষ্টি ফল হিসেবে তরমুজ। পাজন রান্না করা হয় ২১ পদ সবজি মিশিয়ে। ওষুধি জাতীয় সবজি বাধ্যতামূলক। পাজন, তরমুজ ছাড়াও আয়োজন থাকে পিঠা পুলিসহ রকমারি খাবার।

বুধবার রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন বাজার দেখা গেছে, পাজন রান্নার জন্য কেনাকাটা হয়েছে প্রচুর সবজি। চলছে তরমুজ বেচাকেনার ধুম। এছাড়া বিকালে রাঙ্গামাটি স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী বলিখেলা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজবন বিহারের পূর্বঘাটে আনুষ্ঠানিক ফুল ভাসানো হবে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে উদযাপন কমিটির চার দিনের কর্মসূচি। ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি শহরে সকালে ফুল ভাসানো ছাড়াও বয়স্কদের স্নান করানো এবং বিকালে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ও গড়াইয়া নৃত্যের আয়োজন করা হয়েছে আজ। এরপর ১৫ এপ্রিল শুরু হবে মারমা স¤প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি উৎসব।

Advertisement

উৎসবের প্রথমদিন চাকমারা ফুলবিজু, মারমারা পাইংছোয়াই, ত্রিপুরারা হারিবৈসুক পালন করবে। দ্বিতীয় দিন চাকমারা মুলবিজু, মারমারা সাংগ্রাইং আক্যা, ত্রিপুরারা বৈসুকমা এবং তৃতীয় দিন চাকমারা গোজ্যেপোজ্যে, মারমারা সাংগ্রাইং আপ্যাইং ও ত্রিপুরারা বিসিকাতাল পালন করবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাসরত চৌদ্দ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর লোকজন যুগ যুগ ধরে উৎসবটিকে পালন করে আসছে মহাসমারোহে। তাদের বিশ্বাস, ফেলে আসা বছরের কর্মময় জীবনকে উৎসব, বিনোদন ও পুণ্যকর্ম দ্বারা স্বাচ্ছন্দ্যে পরিশোধিত করে ভবিষ্যতকে নতুন করে উজ্জীবিত করে এগিয়ে নিতেই উৎসবটির আয়োজন। উৎসবে সম্মিলন ঘটে ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের লোকজনের। মুখর হয়ে ওঠে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম।

আরএ/পিআর