জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রাখুন : কাদের

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

Advertisement

বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘একটু ধৈর্য ধরুন। কোনো গুজবে কান দেবেন না। ডিভাইসিভ পলিটিক্সের শিকার হবেন না। কারণ অনেকেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।’

মন্ত্রী বলেন, আমি সেদিন যা বলেছি, আজও একই কথা বলব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পাঠিয়েছিলেন। কোটা ব্যবস্থা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশও দিয়েছেন। আমি সেই বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক ও ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। তারা আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে, সুর মিলিয়েছিল। আন্দোলন স্থগিত করেছিল। এরপর কী হলো? কেন আবারও এবং কী কারণে তারা আন্দোলনে আছে সেটি আমার জানা নেই। সরকারের প্রধানমন্ত্রী তার পার্টির সেক্রেটারিকে পাঠিয়েছিলেন এটাই সরকারের বক্তব্য।

Advertisement

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ পার্সনাল কথা বলতেই পারেন। তিনি মন্ত্রী হতে পারেন, এমপি হতে পারেন, বড় নেতা হতে পারেন। সেটি তাদের নিজস্ব বক্তব্য। আমি যেটি বলেছি সেটিই সরকারের বক্তব্য। বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এ দেশে একটি মতলবি মহল আছে।’

‘প্রধানমন্ত্রীর কথায় আস্থা রাখুন। কোটা আন্দোলনটা যেন বিভক্তির রাজনীতির শিকার না হয়। আমারা এর মধ্যে খবর পেয়েছি, কীভাবে এ আন্দোলনকে কারও মুক্তির আন্দোলনে পরিণত করা যায়, তার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমার দলের নেতৃবৃন্দকে বলব, দায়িত্বশীল আচরণ করতে। আর যারা আন্দোলন করছেন তারাও যেন প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে বিশ্বাস রাখে। কোটা সংস্কারের আন্দোলন যারা করছে তারা যেন এ আন্দোলনেই থাকে। কারও খেলার শিকার না হয়।’

দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করা যাবে না। আমি আন্দোলনকারীদের আবারও বলব, গুজবে কান না দিতে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকরা গত নয় বছর কোনো সুযোগ পায়নি। কিন্তু এখন তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। আমি আপনাদের বলব, কারও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হবেন না। অশুভ রাজনীতির ছায়া যেন বিস্তার না করতে পারে।’

‘যদি আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব তাদের হাতে চলে যায় তাহলে দেশের ক্ষতি হবে, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শেখ হাসিনার সরকার ভুল হলেও ভুল সংশোধনের সৎ সাহস রাখে।’

Advertisement

মন্ত্রী বলেন, ‘আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব আছে। সেখানে এ কোটা প্রসঙ্গ চলে আসতে পারে। সেখানে দেখুন প্রধানমন্ত্রী কী বলেন।’

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মতিয়া চৌধুরী আমাকে বলেছেন, তিনি ঢালাওভাবে কথা বলেননি। তিনি বলেছেন, যারা ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করেছে তাদের বলেছি। ঢালাওভাবে নয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন স্পর্শকাতর সময় অতিক্রম করছে সরকার। এ সময়ে দায়িত্বশীল নেতাদের দায়িত্বশীল কথা বলা উচিত। দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বললে তা উস্কানিমূলক হয়। তাই দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলবেন না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সুফল জনগণ না পেলে তা ফলপ্রসূ হবে না, লাভ নেই। তাই কেউ ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে বিজয়ী হতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় সতর্ক থাকতে হবে। কেউ যেন আপনাদের( নেতাকর্মীদের) আচরণে কষ্ট না পায়।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, উপ-কমিটির সদস্য সচিব মৃণাল কান্তি দাস ও শফী আহমেদ প্রমুখ।

এইউএ/এমএআর/আরআইপি