জাতীয়

সারাজীবনের জন্য মানুষের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম

‘আল্লার রহমতে বেঁচে এসেছি। এখন বাসায় যাচ্ছি। অনেক বেশি পাওয়া সৃষ্টিকর্তার কাছে। আমার বেঁচে যাওয়া বিরল ঘটনা। মানুষের সহযোগিতা আর ভালোবাসায় বাসায় ফিরছি। সারাজীবনের জন্য মানুষের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। কখনও ভুলতে পারবো না আপনাদের সহযোগিতার কথা। এখন দোয়া চাই যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি’।

Advertisement

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার সময় নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহত আলিমুন নাহার এ্যানী এভাবেই জাগো নিউজকে অনুভূতির কথা বলছিলেন।

তিনি বলেন, আপাতত সুস্থ আছি। চিকিৎসকরা বলেছেন কোনো সমস্যা হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। তারা আরও কিছুদিন রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি তো সুস্থ। তাই বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সঙ্গে থাকা এ্যানীর বাবা সালাউদ্দিন বলেন, আরও কিছুদিন থাকতে বলেছিল চিকিৎসকরা। কিন্তু এ্যানী বাড়ি যাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছিল তাই তাকে নিয়ে যাচ্ছি। তবে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলেছেন। ভালোমন্দ জানাতে বলেছেন।

Advertisement

এ্যানীর মা নাজমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আমি চাচ্ছি ও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে থাকুক। এজন্য ওকে নিয়ে এখন তার শ্বশুরবাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরে যাবো। এরপর তার শাশুড়ির কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে নিয়ে যাব।

এ্যানীর ছাড়পত্রের ব্যাপারে নিশ্চিত করে ঢামেকের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ও আহতদের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে বলেন, তার শরীরের তেমন বার্ন ছিল না। যেটুকু ছিল তা অনেক আগেই সেরে উঠেছে। এখন সে মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ বোধ করায় আমরা তাকে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে। তাই তাকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া তার মানসিক অবস্থাও আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। আজ সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ্যানীর পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন।

তিনি বলেন, তাদেরকে সুচিকিৎসা দিয়ে ছাড়পত্র দিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। আশা করছি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার পর অপর তিনজনও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। ঢামেকে চিকিৎসাধীন শাহীনের মৃত্যুতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস ২১১। নিহত হন ৪৯ জন যাত্রী, যাদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। আহত হন আরও ১০ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে তিনজনকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হলেও দেশে আনা হয় সাতজনকে।

Advertisement

এদের মধ্যে শাহিন ব্যাপারী নামে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় কবির হোসেন নামে একজনকে। ঢামেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা, শেখ রাশেদ রুবায়েত ও অালিমুন নাহার এ্যানী।

এসএইচ/এমআরএম/জেআইএম