দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছে ৩৩০০ পরিবার

বন্যা পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন গাইবান্ধার ২ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৩ হাজার ৩০০ পরিবার। এ কাজে কার্যকরী পদক্ষেপ রেখেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জরুরি পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়ন প্রকল্প। দাতা সংস্থা ইউকেএইডের অর্থায়নে এতে সহযোগিতা করছে ইউএনঅপসএর মাধ্যমে ড্যান চার্চ এইড (ডিসিএ)।

Advertisement

প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সদর উপজেলার কামারজানী ও মোল্লারচর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ও হরিপুর ইউনিয়নের ৩ হাজার ৩০০ পরিবারকে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে এককালীন ৯ হাজার টাকা, ১২৭টি নলকূপের প্লাটফর্ম পাকাকরণ, বসতভিটা উঁচুকরণ করা হয়েছে ১২৫টি, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা হয়েছে ১ হাজার ২৮২টি, ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচারাস্তা মেরামত করা হয়েছে ৫ কিলোমিটার, স্কুল-মাদরাসা মাঠ ও মসজিদ চত্বর উঁচুকরণ করা হয়েছে ৮টি। এছাড়াও পরিবারগুলোকে বিভিন্নপ্রকার সবজির বীজ, সার, স্প্রে-মেশিন, পানির ঝরনা ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে পোড়ারচর ও কড়াইবাড়ীচর গ্রামে দেখা গেছে, প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা বাড়ির উঠানে শাক-সবজির চাষ করেছেন। প্রকল্পের টাকায় কেনা হয়েছে ছাগল-ভেড়া, হাঁস-মুরগি। এ ছাড়া দেয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপকরণও।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের পোড়ারচর গ্রামের রিকতা বেগম বলেন, ৯ হাজার টাকা পেয়ে আমি বাড়ির উঠানে শাক-সবজির চাষ করেছি। খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করি। এ ছাড়া একটি ভেড়া কিনেছি। প্রকল্পের এ সুবিধা না পেলে সংসারে এতো উন্নতি হতো না। একই গ্রামের জামেলা ও রুজিনা বেগম বলেন, আমাদের বসতবাড়ি মাটি দিয়ে উঁচু করা হয়েছে। বন্যায় এখন আর আমাদের বাড়িতে পানি উঠবে না।

Advertisement

প্রকল্পের সুবিধাভোগী পাশ্ববর্তী কামারজানী ইউনিয়নের কড়াইবাড়ীচর গ্রামের ফুলি ও ফিরোজা বেগম বলেন, চরের ভাঙা রাস্তাগুলো মাটি দিয়ে মেরামত করার ফলে এখন আমরা ভালোভাবে চলাচল করতে পারছি। রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করে টাকাও পেয়েছি।

আরডিআরএস বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার পোরসিয়া রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চরের মানুষরা প্রতিবছর বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন চিহ্নিত করে এবং যারা কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান থেকে কোন সহযোগিতা পায়নি তাদের জন্য এ প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, বসতবাড়িতে সবজির চাষসহ আয় বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালনা করবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা আগামী দিনে সতর্কতার সঙ্গে সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সমস্যা মোকাবেলা করবে। প্রকল্পের সুবিধাভোগীর মধ্যে ৩২৫০ জন নারী ও ৫০ জন পুরুষ রয়েছে। যাদের মধ্যে ১১৯টি রয়েছে প্রতিবন্ধী পরিবার।

ড্যান চার্চ এইডের (ডিসিএ) প্রকল্প সমন্বয়কারী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বন্যা পরবর্তী সময়ে কর্ম এলাকার মানুষের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেকখানি সহায়তা করবে।

Advertisement

রওশন আলম পাপুল/আরএ/পিআর