দীর্ঘদিন ধরেই নাটক-মডেলিং দিয়ে জনপ্রিয়তা নিয়ে কাজ করে আসছেন মাসুমা রহমান নাবিলা। তবে তার ক্যারিয়ারে বসন্তের উন্মাদনা এনে দিলো ‘আয়নাবাজি’ ছবিটি। এখানে চঞ্চল চৌধুরীর বিপরীতে অভিনয় করে দর্শকদের মনে দাগ কটেছেন তিনি। আজকাল তাকে ‘আয়নাবাজি’র নাবিলা বলেই ডাকছেন সবাই। আজ ৮ এপ্রিল মিষ্টি হাসির সেই নাবিলার জন্মদিন। বয়স কতো হলো সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন হাসির আড়ালে নিরবতায়। তবে জানালেন, এবারের জন্মদিন স্পেশাল। কারণ? নাবিলা বলেন, ‘জীবনের নতুন আর গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টি শুরু করতে যাচ্ছি এই বছরেই। এ মাসেই তো বিয়ের তারিখ। সবার কাছে দোয়া ও শুভকামনা চাই।’
Advertisement
নাবিলার জন্মদিন উপলক্ষে তার ফেসবুকের দেওয়ালে শুভেচ্ছার বান ডেকেছে। পাশাপাশি কাছের মানুষেরা ফোনে জন্মদিনের উইশ করছেন। সবার প্রতি ভালোবাসা জানাতে ভুল করেননি নাবিলা। বললেন, ‘এতো এতো ভালোবাসার ঋণ কোনোদিন মেটানো যাবে না। আমি চেষ্টা করে যাবো সবার ভালোবাসার প্রতিদান ভালো কাজের বিনিময়ে দিতে।’
নাবিলা এই মুহূর্তে কিছু অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ব্যস্ত রয়েছেন। সম্প্রতি কলকাতার গায়ক অনুপম রায়ের সঙ্গে অনুপমেরই গাওয়া গানের ভিডিওতে নাবিলার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে দুই বাংলাতে। হাতে আছে ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু নাটক-টেলিছবির প্রস্তাব। ভালো গল্প আর চরিত্র অনুসন্ধান করছেন তিনি। পছন্দ হলে দাঁড়াবেন ক্যামেরার সামনে। একই জবাব দিলেন চলচ্চিত্র নিয়েও। ‘আয়নাবাজি’র মতে কিংবা তাকে ছাড়িয়ে যাবে এমন ছবি না হলে কাজ করবেন না নাবিলা। ভালো কাজের ধারাবাহিকতায় দর্শকদের মনে চিরদিন থেকে যেতে চান তিনি।
এর বাইরে ব্যক্তিজীবনটা তুমুল ব্যস্ততায় কাটছে এই অভিনেত্রীর। উপলক্ষ বিয়ে। আসছে ২৬ এপ্রিল পুরনো বন্ধু জোবাইদুল হকের গলায় বিয়ের মালা দেবেন তিনি। জোবাইদুল পেশায় ব্যাংকার। সে নিয়েই চলছে প্রস্তুতি।
Advertisement
প্রসঙ্গত, মাসুমা রহমান নাবিলার জন্ম সৌদি আরবের জেদ্দায়। তার বাবা লুৎফর রহমান সেখানে একটি বেসরকারি ফার্মে একজন নিরীক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাদে সেখানেই কেটেছে নাবিলার শৈশব। মরুভূমির সেই অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশোনা করেছেন নাবিলা। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) শেষ করে ঢাকায় চলে আসেন এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) শেষ করেন। এরপর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ (অনার্স) সম্পন্ন করেছেন।
নাবিলার মডেলিংয়ে আত্নপ্রকাশ ঘটে ২০০৬ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালিত একটি সার্প ব্লেডের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এছাড়া তিনি ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী, বাংলালিংক থ্রি জি,রবি,ডাবর ভাটিকা হেয়ার অয়েল,আমিন জুয়েলার্সের বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করেন। বেশ কিছু ম্যাগাজিন এবং খবরের কাগজের প্রচ্ছদে তাকে মডেল হিসেবে দেখা যায়। তিনি ভাটিকা ন্যাচারালস ইউরোপের জন্য একজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মনোনিত হন।
২০০৬-এ বাংলাভিশনের ‘এবং ক্লাসের বাইরে’ নামক একটি স্কুল ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে মিডিয়া জগতে নাবিলার পথ চলা শুরু হয়। এরপর তিনি এনটিভির লাইভ কুইজ অনুষ্ঠান ‘জানার আছে বলার আছে’ দিয়ে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পান। বিপিএল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং আইসিসি বিশ্ব টোয়েন্টি ২০ থেকে ১০০ দিনের কাউন্টডাউনে উপস্থাপনা নাবিলাকে এনে দিয়েছে অনন্য এক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা।
উপস্থাপনার পাশাপাশি নাটক-টেলিছবিতে কালেভদ্রে অভিনয় করেন নাবিলা। ২০১৬ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আয়নাবাজি’। অমিতাভ রেজা পরিচালিত ছবিটি ওই বছরের সেরা ব্যবসা সফল ছবি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ছবিটি জিতে নিয়েছে সর্বাধিক ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।
Advertisement
এলএ/এমএস