হেদায়েত তথা সৎপথ প্রাপ্তির বিষয়টি আল্লাহর তাআলার মহা অনুগ্রহ। তিনি যাকে চান হেদায়েত দান করেন। দান-অনুদান প্রদানের মাধ্যমে মানুষকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করতে বা দান-অনুদান বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ইসলামে প্রবেশের প্রতি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
Advertisement
মুসলিম-অমুসলিম সবাইকে দান-সাদকা করার অনুমতি প্রদান করেছে শান্তির জীবন ব্যবস্থা ইসলাম। ইসলামের উদার নীতি ঘোষিত পবিত্র কুরআনের এ আয়াতে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলা হেদায়েতের ব্যাপারে এ ইঙ্গিত প্রদান করছেন যে, হেদায়েত আল্লাহ তাআলার হাতে। আর আপনি বিশ্ববাসীকে এ ফরমান জানিয়ে দিন যে, প্রত্যেকের দান-সাদকা প্রকৃতপক্ষে তার নিজের উপকারেই আসবে।
এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি জুলুম করবেন না। আল্লাহ তাআলা আয়াতে সে ইঙ্গিত প্রদান করেন বলেন-
Advertisement
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২৭২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে সঠিক পথ দানের বিষয়টি একান্ত তাঁর ইচ্ছাধীন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর দান-সাদকা প্রত্যেকের নিজেদের কল্যাণ ও আল্লাহর সন্তুষ্টিতেই আসে। আর প্রতিদান প্রদানেও আল্লাহ কারো প্রতি জুলুম করবেন না বলেও আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে।
আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা আপনার বিরোধিতা করে তাদেরকে দান-সাদকা বন্ধ করে তাদেরকে ইসলামে প্রবেশের ব্যবস্থা করা আপনার দায়িত্ব নয়; বরং আপনার দায়িত্ব হলো তাদের কাছে ইসলামের বাণী পৌছে দেয়া।
অতঃপর আল্লাহ তাআলা যাকে তাওফিক দান করবেন সে হেদায়তে তথা সঠিক পথ লাভ করবে আর যাকে তাওফিক দেয়া হবে না সে বঞ্চিত হবে।
Advertisement
এ আয়াতের শানে নুজুলে ইমাম রাজি একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন-
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর কন্যা হজরত আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহা মা নাতিলা এবংতাঁর মা-সহ হজরত আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। তারা উভয়েই তখন মুশরেক ছিল।
তখন হজরত আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, আমি এ বিষয়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুমতি গ্রহণ না করে আপনাদের কোনো কিছু দান-সাদকা করতে পারবো না।
এরপর তিনি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে মুশরেক আত্মীয়দেরকে দান করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াত নাজিল হয়।
তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে দান-সাদকা করার অনুমতি দান করেন। (তাফসিরে মাজহারি)
কোনো কোনো তাফসিরকার বলেন, ‘অর্থ-সম্পদের লোভে যেন কেউ মুসলমান না হয় সে জন্য প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমান ব্যতিত অন্য কোনো ব্যক্তিকে দান-সাদকা করতে নিষেধ করেছিলেন। তখন এ আয়াত নাজিল হয়। আর তাতে ঘোষণা করা হয়, মুসলমান-অমুসলমান সবাইকে দিান-সাদকা করা যায়। (তাফসিরে কবির)
পড়ুন- সুরা বাকারার ২৭১ নং আয়াত
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের উদার নীতি নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়নের পাশাপাশি এর প্রচার-প্রসারে দাওয়াতি কাজ ও দান-সাদকা অব্যাহত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর