জাতীয়

কথা বলছেন না, রেগে যাচ্ছেন রাজীব

ছোটবেলায় বাবা-মা হারানো রাজীব হাত হারিয়েছেন, পাঁচ দিন হতে এল। হাসপাতালের বিছানায় এখনও শুয়ে আছেন তিনি। দুর্ঘটনার পর থেকে এ ক’দিন চোখই খুলছিলেন না। তবে এখন চোখ খুলছেন বলে জানিয়েছেন রাজীবের খালা জাহানারা বেগম।

Advertisement

তার মতে রাজীবের অবস্থা এখন ভালোর দিকে। দুই বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে হাত হারানো রাজীব এতদিনে বুঝে গেছেন তার একটি হাত আর নেই। এর আগেও রাজীব তার ডান হাত সোজা করে দিতে বলেছে, তখনও সে জানত না ওই হাতটি তার শরীরে আর নেই।

দুর্ঘটনার দিন শমরিতা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার সময়ও রাজীব তার সঙ্গে থাকা স্বজনদের বলেছে, ‘মাথায় ব্যথা লাগতেছে, গাড়ি আস্তে চালাও, েআমি সহ্য করতে পারছি না, আমার পা-টা একটু সোজা করে দাও, আমার হাতটা একটু সোজা করে দাও।’

রাজীবের খালা জাহানার বেগম বলছেন, রাজীবের অবস্থা ভালোর দিকে, আগের চেয়ে কিছুটা ভালোর দিকে। সে এখন চোখ খুলছে।

Advertisement

তবে জাহানারা শঙ্কা রাজীব এখনও কাউকে চিনতে পারছেন না। রাজীব কারো সঙ্গে এখনও কথাও বলছেন না।

রোববার সকালে তিনি বলেন, ডাক্তাররা তাকে জুস ও স্যুপ খাওয়াতে বলেছেন। কিন্তু রাত থেকে যতবারই খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে সে খায়নি।

জাহানারা বলেন, খাওয়ানোর চেষ্টা করা হলে সে রেগে যাচ্ছে। বলছে- বলছি না, আমি খাব না।

রাজীবের বিষয়ে জানতে চাইলে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. সামশুজ্জামান বলেন, আজ তার সিটিস্ক্যান করা হবে। সিটিস্ক্যানের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বলা যাবে তার কী অবস্থা।

Advertisement

গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে গা ঘেঁষে অতিক্রম করে। এ সময় দুই বাসের প্রবল চাপে গাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। এতে তার মাথায়ও প্রচণ্ড আঘাত লাগে।

রাজীবের মাথার খুলিতেও চিড় ধরেছে বলে খবর রয়েছে।

এরপর তাকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতাল পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

এসএইচ/এনএফ/এমএস