বাংলাদেশ থেকে গুগল, হোয়াটসঅ্যাপ, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব ও ফেসবুক গত ১০ বছরে অনলাইনে কত টাকা আয় করেছে এবং এই টাকার ওপরে সরকার কত শতাংশ রাজস্ব (ভ্যাট) আদায় করতে পেরেছে তা জানতে চেয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
শনিবার গুগল, ফেসবুকসহ অন্যান্য ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে ই-মেইল ও কুরিয়ারের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর ছয়জন আইনজীবী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নোটিশের জবাব না দিলে আইন অনুযায়ী রিট আবেদন করে এর প্রতিকার চাওয়া হবে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন নোটিশ পাঠানো আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব।
যাদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারা হলেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রথম আলোর সম্পাদক এবং বাংলাদেশ নিউজ পেপারস ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমানসহ, গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে।
আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব জানান, প্রযুক্তির যুগে গুগল, ফেসবুক এখন প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেখতে আগ্রহী। দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। এ সুযোগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে দেশ থেকে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট বিশ্বের নামিদামি প্রতিষ্ঠানসমূহ কিন্তু সরকারকে এক টাকাও রাজস্ব দিচ্ছে না। প্রতি বছর কত টাকা বিজ্ঞাপন বাবদ বিদেশে পাচার হচ্ছে তার সঠিক কোনো হিসেব নেই সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে। কারণ বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের অর্থ পরিশোধ করছেন ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য অনলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে।
Advertisement
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউসার, অ্যাডভোকেট আবু জাফর মো. সালেহ, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের।
নোটিশে-
১) গুগল, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুক এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া সকল বিল হতে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য রাজস্ব কর কেটে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে।
২) একইসঙ্গে রাজস্ব কর আদায়ের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারির জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে।
Advertisement
৩) সরকারকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে তদন্ত করা এবং বিগত ১০ বছরে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব ওই ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হতে পেতে পারতো সে হিসাব করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে তা আদায়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
৪) গুগল, ইয়াহু, অ্যামাজন, ইউটিউব, ফেসবুক এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের গত ১০ বছরের বকেয়া রাজস্ব বাংলাদেশ সরকারের কোষাগারে ফেরত পাঠানোর জন্য নোটিশে বলা হয়।
এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি