দেশজুড়ে

ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল ধরেছে নীলফামারীতে

নীলফামারীর ডিমলায় খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের বন্দর খড়িবাড়ী গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেলের বাগানে শতাধিক ঔষধি গাছের মধ্যে এবার ফলেছে করোসল।  করোসল (corossol) অ্যানোনা মিউরিকাটা গোত্রের একটি ফল যা অনেক ক্ষেত্রেই ক্যামো থ্যারাপির কাজ করে থাকে। কর্নেল আলমাস রাইসুল গনির (অব.) বাড়িতে প্রায় দুই একর জমিতে নিজ উদ্যোগে লাগিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা মানবদেহের উপকারি শতাধিক ঔষধি ফলজ গাছ।  করোসল গাছটি ২০১১ সালে পশ্চিম আফ্রিকার আইভরিকোস্ট থেকে সংগ্রহ করা হয়। (www.corossol.com) ওয়েব সাইটে ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে এ ফলের পক্ষে বিশেষজ্ঞদের বহুবিদ মতামত পাওয়া যায়। অনেক দেশেই এ ফলটি ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল হিসেবে পরিচিত।  প্রায় পাঁচবছর বয়সী ছয়টি গাছের মধ্যে একটি গাছে একটি ফল ফলেছে যার আনুমানিক ওজন ২৫০ গ্রাম।  এছাড়াও ওই বাগানে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক শতাধিক উপকারি গাছ।  তিনি শখের বশবর্তী হয়ে বসতভিটায় দুই শতাধিক বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ রোপণ করেছেন।  বিভিন্ন দেশ থেকে ঘুরে এসে গনি সাহেবের সৌখিনতার প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাবে তার এই বাগানে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিপূর্ণ ওই বাগানের প্রতিটি গাছের পরিচিতির জন্য নাম সম্বলিত সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।  এ বাগান সঠিকভাবে পরিচর্যার জন্য রেখেছেন দুইজন কেয়ারটেকার।  বাগানটিতে আবু কদু, কোরঞ্জা, কদবেল, আবুথাম, সানফল, অ্যাগফ্রুট, মেংগ্যাসটিন, চেরি, শফেদা, শরিফা, আলু বোখরা, কদবেল, ফসলা, কমলাসহ ২ শতাধিক ফলের গাছ রয়েছে। বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীদের জন্য সুসংবাদ হচ্ছে যে, বালু মাটিতে করোসলের ফলন হচ্ছে।  বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে করোসল চাষ করলে ক্যান্সার রোগীদের ক্যামো থ্যারাপির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে না।  বর্তমানে কর্নেল সাহেবের বাগানের ২৫০ গ্রাম ওজনের করোসল ফলটির মূল্য ৪৫ হাজার বলে জানা যায়।কর্নেল এ আর গনির (আলমাস রাইসুল গনি) সেই বাগানে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত দুই কেয়ারটেকার জুয়েল ইসলাম (৩৫) ও তফিজুল ইসলাম (৫০)।  তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্যার আমাদের শুধু এই গাছ রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই রেখেছেন।  প্রতিদিন শত ব্যস্ততার মাঝেও গাছের খোঁজ-খবর নেন তিনি।  গাছের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্থানীয় কৃষিবিভাগের পরামর্শে প্রয়োজন অনুযায়ী গাছের রোগের চিকিৎসা, পরিমিত পানি ও খাদ্য দিয়ে থাকেন তারা। তারা বলেন, কর্নেল সাহেব ঢাকায় থাকেন।  মাঝেমাঝে গ্রামের বাড়িতে আসেন।  গ্রামের বাড়িতে যে ২/১ দিন তিনি কাটান তা বলা চলে গাছের সঙ্গেই।  তিনি এলেই দিনরাত প্রতিটি গাছের কাছে গিয়ে ভালোমন্দ দেখেন ও প্রয়োজনে নিজেই পরিচর্যা করেন। এ বিষয়ে কর্নেল আলমাস রাইসুল গনির (অব.) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জাগো নিউজকে জানান, সেনাবাহিনীতে চাকরির কারণে বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালনের সুযোগ হয়েছিল।  যে দেশেই যেতাম সেখানেই খুঁজে নিতাম মানবদেহের জন্য উপকারী বৃক্ষ এবং তা সংগ্রহ করে বৃক্ষের এ বাগান তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মানবদেহের উপকারি ঔষধি গাছের বাগানটি বাণিজ্যিক পরিকল্পনায় লাগানো হয়নি। নীলফামারীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আফতাব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, দেশের প্রতিটি নাগরিককে ফলজ বৃক্ষের পাশাপাশি ঔষধি গাছ লাগানোর জন্য সরকারিভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।  নিজ উদ্যোগে শতাধিক ঔষধি গাছের পাশাপাশি করোসলের ফলনে কর্নেল আলমাস রাইসুল গনির বাগানটি উত্তরাঞ্চলের মডেল বাগান হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ক্যান্সার রোগ নিরাময়ের জন্য ক্যামোথ্যারাপির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।  বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বেলে-দোঁআশ মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে করোসল চাষে ভালো ফল আসবে।জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/এমএএস/আরআইপি

Advertisement