চীনে বন্ধ রয়েছে মেসেজিং অ্যাপ লাইন ও ফটো শেয়ারিং সাইট ফ্লিকারের মতো একাধিক অনলাইন সেবা। সম্প্রতি দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা হংকংয়ে লং মার্চের আয়োজন করে। ধারণা করা হচ্ছে, অনলাইনে তারা যাতে কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে না পারে, সেজন্যই দেশটির সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।জানা যায়, চীনারা লাইন কিংবা মেসেজিং অ্যাপ কাকাওটকের মতো সেবাগুলো ব্যবহার করতে পারছেন না। তবে এ দুটি প্রতিষ্ঠানই সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কোনো কারণ জানাতে পারেনি। এমনকি কবে নাগাদ এ সেবাগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে, সে বিষয়ে তথ্য জানাতে ব্যর্থ হয়।একাধিক সূত্রে জানা যায়, দেশটিতে ইয়াহুর ফটো শেয়ারিং সাইট ফ্লিকার ও মাইক্রোসফটের ক্লাউড স্টোরেজ সেবা ওয়ানড্রাইভের সেবাও বন্ধ রয়েছে। মাইক্রোসফট এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এদিকে ইয়াহু জানায়, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং এ বিষয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। চীনভিত্তিক অ্যান্টি-সেন্সরশিপ সাইট গ্রেটফায়ার ডটওআরজির সদস্য চার্লি স্মিথ জানান, কোনো যান্ত্রিক সমস্যার জন্য যে সেবা বন্ধ হয়নি, তা নিশ্চিত। তার মতে, সম্প্রতি দেশটির গণতন্ত্রপন্থীদের আয়োজিত পদযাত্রার ছবি বা কোনো ধরনের প্রচারণা যাতে অনলাইনে প্রকাশ না হয়, সেজন্যই দেশটির সমাজতান্ত্রিক সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।পদযাত্রায় গণতন্ত্রপন্থীদের অনেকেই দাবি করেন, তাদের অনেকের ওয়েবো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লাইনের এক মুখপাত্র জানান, সেবাটি চালু করতে তারা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। গত মাসে দেশটির সরকার গুগলেরও বেশকিছু সেবায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর মধ্যে রয়েছে সার্চ ইঞ্জিন সেবা, ই-মেইল ও অনলাইন বিজ্ঞাপন সেবা। জিন পিং গত বছর দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অনলাইন কর্মকাণ্ডের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করেন। এমনকি সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে মত প্রকাশের জন্যও শাস্তি দেয়া হয় অনেককে।সাম্প্রতিক সময়ে অনেক দেশেই অনলাইন বিভিন্ন সাইট বন্ধ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেকে আবার সাইবার নজরদারির কথা বিবেচনা করে সাইটগুলো বন্ধ করেছে। তুরস্কে সম্প্রতি ইউটিউব, টুইটারের মতো শীর্ষস্থানীয় সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে সাইটগুলো চালু হলেও হঠাত্ বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে অনেক সমালোচনা হয়। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো এখন মানুষের মত প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী যে কোনো ঘটনা এখন সংবাদমাধ্যমের পর পর এ সাইটগুলোয় বেশি প্রকাশ হচ্ছে। মানুষ এখন যে কোনো খবরের জন্য সাইটগুলোর ওপরও অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এদিকে মেসেজিং অ্যাপগুলোর মাধ্যমেও অনেক সংগঠন তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়ার প্রবণতার ফলে মানুষের মত প্রকাশের অধিকার খর্ব হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চীনে এ অনলাইন সেবাগুলো পুনরায় চালু করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ ধরনের সাইট বন্ধ করে দেয়ায় সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি সাধারণ গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রয়টার্স
Advertisement