বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। চৈত্র মাসের মধ্য দুপুরে কাঠফাটা রোদে আসবাবপত্র তৈরির সময় টপটপ করে ঘাম ঝরছে আব্দুর রহিমের। তার বাড়ি বরিশালের ভাষানচর এলাকায়। জীবন-জীবিকার তাগিদে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঝালকাঠির শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করেন। কাঠমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। শহরের গুরুদাম ব্রিজের পূর্ব ঢালে কবিরাজ বাড়ি রোডের প্রবেশমুখে অস্থায়ী টিনশেড ছাউনি দিয়ে কাজ করছেন তিনি।
Advertisement
কথা হলে আব্দুর রহিম জানান, তার চারজনের সংসার। ২ ছেলে লেখাপড়া করে। শহরে বাসা বাড়ি নিয়ে থাকা-খাওয়া ও সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ সব তাকেই বহন করতে হয়। বড় ছেলে শামীম হোসেন ঝালকাঠি সরকারি কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ছোট ছেলে শাওন হোসেন ঝালকাঠি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কুতুবনগর আলিম মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলেদের জন্যই এত কষ্ট করা। ছেলেরা মানুষ হলে জীবন স্বার্থক হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এক সময় রিকশা চালাতাম। বর্তমানে রিকশা ভাড়া কম হওয়ায় কাঠমিস্ত্রির কাজ করি। তবে এখন গাছের মূল্য ও উৎপদানে বেশ খরচ হয়। আসবাবপত্র বিক্রি করে সে অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাওয়া যায় না।
খাবার ও খরচের জন্য আমাদের গরম-বর্ষা নেই। খেতে হলে কাজ করতেই হবে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রয়োজনে ৩টি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি। সেখানে সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। সপ্তাহের ৭ দিনে ৩টি কিস্তি দিয়ে সংসার চালানো, ছেলেদের পড়ালেখা করানো বেশ কষ্টকর হয়ে উঠেছে বলে জানান তিনি।
Advertisement
আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস