কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বৌদ্ধ বিহারগুলোতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার দুই বছর পূর্ণ হলো সোমবার। ঘটনার পর সরকারি উদ্যোগে সেনাবাহিনী ও বিজিবির তত্ত্বাবধানে বৌদ্ধ বিহার পুনর্নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত ঘর নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়। পাশাপাশি সরকার সেখানে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাও নেয়। তবে, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এ ঘটনার পর পুলিশের দায়ের করা মামলা ও মামলার অভিযোগপত্র নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। স্থানীয়দের দাবি, মামলার অভিযোগপত্র থেকে বাদ পড়েছেন জড়িত ও চিহ্নিতরা এবং আসামি হয়েছেন নিরীহরা। ঘটনার শুরু যেভাবেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ছবিতে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার ইস্যুতে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা জনৈক উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্ড থেকে পোস্ট করা হয় ওই ছবিটি। কোরআন শরীফের অবমাননার সূত্র ধরে এ দিন রাতেই একদল দুর্বৃত্ত রামু উপজেলা সদর ও আশেপাশের ১২টি বৌদ্ধ বিহারে তাণ্ডব চালায়। পুড়িয়ে দেয় শত বছরের ঐতিহ্য ও পুরাকীর্তি। আশেপাশে বৌদ্ধ পল্লীর বেশ কয়েকটি বাড়িঘরেও হামলা,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর পরের দিন ৩০ সেপ্টেম্বর একই ঘটনা সংঘটিত হয় কক্সবাজারের সদর, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায়।পরবর্তী ঘটনা এ ঘটনার পর জেলার ৪ উপজেলায় ১৯টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এসব মামলায় ১৫ হাজার জনকে আসামি দেখানো হয় এবং এজাহারে নাম উল্লেখ করা হয় ৩৭৫ জনের। এর মধ্যে শুধু রামু উপজেলার ঘটনায় মামলা ছিল ৭টি। এই ঘটনার দুই বছরের মধ্যে পুলিশ ১৯টি মামলারই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে।তবে, প্রকৃত আসামিদের বাদ দিতে অভিযোগপত্র দাখিলের অভিযোগ ওঠেছে। বিরোধী দলের অনেককে বিনা কারণে এই মামলার আসামি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, ‘যারা হামলা করেছে ঘটনার পরের দিন পত্রিকার সচিত্র প্রতিবেদনে তাদের নাম ও ছবি এসেছে’।দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, মামলার অভিযোগপত্রে তাদের নাম নেই। প্রকৃত আসামিরা ছাড়া পাচ্ছেন। অথচ যারা দোষী নন কিংবা সামান্য জড়িত তারা শাস্তি পাচ্ছেন।” এ ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তির পাবে কি না তা নিয়েও শঙ্কিত ও সন্দিহান বলেও জানান তিনি।
Advertisement