দেশজুড়ে

বাঁশির গ্রাম দেবীপুরে বৈশাখী ব্যস্ততা

আর কয়েক দিন বাদেই পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের বিভিন্ন মেলা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর বাঁশি তৈরির কারিগররা। পরিবার পরিজন নিয়ে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে বাঁশি তৈরিতে ব্যস্ত সবাই। সারা বছর তারা এ বাঁশি তৈরি করলেও এখন ব্যস্ততা বেড়েছে বহুগুনে। সঠিক পৃষ্ঠপোশকতা পেলে এসব কারিগররা আরও উন্নতি করতে পারবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

নওগাঁ সদর উপজেলার দেবীপুর গ্রাম। তবে গ্রামটির নাম দেবীপুর হলেও এখন এটি বাঁশির গ্রাম হিসেবে পরিচিত। বৈশাখের মেলাকে সামনে রেখে বাঁশি তৈরীতে নল কাটা, চাছা-ছোলা, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য জরি প্যাচানো ও বিভিন্ন রঙের বেলুন লাগানোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। এ গ্রামের প্রায় দুই থেকে আড়াইশ পরিবার বাঁশি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

বাঁশি তৈরির প্রধান উপকরণ নল। জমি থেকে নল কাটার পর তা রোদে শুকানো হয়। এরপর পরিষ্কার করে মাপ মতো ছোট ছোট করে কাটা হয়। বাঁশির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বাঁশির উপর চকচকে কাগজ (জরি) প্যাচানো হয়। এছাড়া বাঁশিতে বিভিন্ন রঙের বেলুন লাগানো হয়। সাধারণত প্রতিটি বাঁশির দাম ১০-১২ টাকা এবং বেলুন ও জরি প্যাচানো বাঁশি ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা বাঁশি নিয়ে ঢাকা, ময়মনসিং, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, বগুড়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় দলবেঁধে ৭-১০ দিনের জন্য বেরিয়ে যান।

বাঁশি তৈরির কারিগর পারভিন সুলতানা ও মৌসুমি বেগম বলেন, পুরুষরা ব্যবসার কাজে বাড়ির বাইরে থাকেন। তাই আমরাই সংসারের কাজের পাশাপাশি বাঁশি তৈরি করি। পুরুষরা বাঁশি তৈরির নল চাছা-ছোলাতে সহযোগিতা করে। পরিবারের সবাই মিলে বাঁশি বানাই। সঠিক পৃষ্টপোশকতা পেলে আমাদের জন্য আরো সুবিধা হতো।

Advertisement

ব্যবসায়ী ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, মেলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা বাঁশিগুলো তৈরি করছি। প্রতিটি মেলায় প্রায় ৪-৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। লাভ ভালোই থাকে। তবে দূরবর্তী জেলায় যাওয়া ও থাকায় খরচটা বেশি হয়। তবে দিনমজুরি কাজ করার চেয়ে স্বাধীনভাবে এ পেশা করতে পারি।

স্থানীয় মহাজন হেলাল হোসেন বলেন, বৈশাখে বাঁশির চাহিদা থাকে বেশি। নিজে তৈরি করি এবং গ্রামের বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করি। ১০০টি সাদা বাঁশির (সাধারণ) দাম ৬০০-৬৫০ টাকা। ১৫০-২০০ টাকা লাভে ঢাকা, সিলেট, বগুড়া, পাবনা, দিনাজপুর, খুলনা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা থেকে পাইকাররা এসে নিয়ে যান।

আব্বাস আলী/এফএ/আরআইপি

Advertisement