পথ চলতে ইভটিজিংয়ের মুখোমুখি হতে হয় অনেক মেয়েকে। তেমনি এক সমস্যায় পড়তে হতো রাঙামাটির এক মেয়েকে। প্রায় সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তো সে। এমন অবস্থায় ইভটিজিংয়ের হাত থেকে রেহাই পাবার উপায় খুঁজতে থাকে সে। ভাবতে থাকে কি করলে প্রতিরোধ করা যাবে ইভটিজার বা বখাটেদের? কিছুদিন পরই খবর পেল রাঙামাটিতে বক্সিং প্রশিক্ষণ হচ্ছে। দেরি না করে চলে যায় বক্সিং প্রশিক্ষণে। সেই থেকে বক্সিং খেলা শুরু। সেই মেয়েটি হলো শিপা চাকমা।
Advertisement
সিন্ধুরাত চাকমার তিন সন্তানের এক সন্তান শিপা চাকমা। রাঙামাটির টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বর্তমানে সে পাহাড়ে বক্সিংয়ের নতুন দিগন্ত সূচনার চেষ্টা করছে। জাতীয় যুব গেমসে (২০১৭-২০১৮) সারাদেশ থেকে বাছাই করা প্রতিযোগিদের মধ্যে বক্সিংয়ে ৫১ কেজিতে অর্জন করে ব্রোঞ্জ পদক। বক্সিংয়ে এমন অর্জন রাঙামাটিতে প্রথম।
শিপা চাকমার এমন অর্জনে খুবই খুশি কোচ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা। সকলেই চায় শিপা যাতে এতটুকুতেই থেমে না যায়। জাতীয় পর্যায়ে সে রাঙামাটির নাম উজ্জ্বল করবে এমনটি প্রত্যাশা তাদের।
রাঙামাটি স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, প্র্যাকটিসে ব্যস্ত শিপা চাকমা। আলাপে সে জানায় তার স্বপ্নের কথা। শিপা চাকমা জানায়, বক্সিং খেলায় আসা তার জন্য সহজ ছিল না। বাসা থেকে বাবা-মা আপত্তি দিয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের অনেক বুঝিয়ে বক্সিং প্র্যাকটিসে আসি। ইভটিজিং থেকে বাঁচার জন্যই মূলত এ খেলায় আগ্রহ তৈরি হয় আমার। যদিওবা প্রথমে শুধুমাত্র আত্মরক্ষার কথা চিন্তা করতাম, কিন্তু এটি এখন খুবই জনপ্রিয় এবং আমাদের দেশের সম্ভাবনাময় একটি খেলা।
Advertisement
এমন অর্জনে কাদের ভূমিকা বেশি জানতে চাইলে শিপা জানায়, কোচ মিন্টু স্যার খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের যেমন কৌশল শিখিয়েছেন, তেমনি উৎসাহ দিতেন সব সময়। যাতে ভালো কিছু অর্জন করতে পারি।
শিপা সম্পর্কে তার কোচ মিন্টু বলেন, শিপা খুবই মেধাবি ও চৌকস খেলোয়াড়। কোনো কিছু অর্জন বা জয়ী হবার জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা তার মধ্যে রয়েছে। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে শিপা অনেক দূর যেতে পারবে, এমনকি জাতীয় পর্যায়ে অনেক ভালো ফলাফল সে করতে পারবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বরুণ বিকাশ দেওয়ান বলেন, শিপার এমন অর্জন শুধু জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে নয়, পুরো রাঙামাটিকে গৌরবান্বিত করেছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে তার মঝেও আমরা চেষ্টা করবো বক্সিংটাকে যাতে আরও ভালোভাবে সহযোগিতা করা যায় এবং শিপা চাকমার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
শিপা চাকমা যাতে আরও ভালো কিছু অর্জন করতে পারে এবং সেই সঙ্ড়ে রাঙামাটি জেলার নাম উজ্জ্বল করে সেই প্রত্যাশা করছে জেলা ক্রীড়াপ্রেমীরা।
Advertisement
এমএএস/এমএস