বিশেষ প্রতিবেদন

তরমুজের বাম্পার ফলন, লাভের আশায় কৃষক

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার তরমুজের ফলনও হচ্ছে বেশ। তাই চাষিদের মুখে মধুর হাসি। তবে এ হাসি পূর্ণতা পাবে সঠিক মূল্য পেলেই। তরমুজ চাষ করে সেই আসায় বুক বেধে আছেন চাষিরা।

Advertisement

মঙ্গলবার রাজধানীর বাদামতলীর ঘাটে কথা হয় ঝালকাঠির রাঙ্গাবালির কৃষক জাফর আকনের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই তরমুজ চাষ করি। এবার বৃষ্টি কম হয়েছে। তরমুজ চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। তাই ফলনও ভাল পেয়েছি। এখন দামটা ঠিকমত পেলেই হয়। এজন্য নিজেই ক্ষেত থেকে তরমুজ নিয়ে ঢাকায় বিক্রি করতে এসেছি’।

তিনি বলেন, ‘গত রোববার রাঙ্গাবালি থেকে ট্রলারে তরমুজ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করি। দুদিন পর আজ ভোরে পৌঁছেছি। দুই হাজার তরমুজ এনেছি। সময় ১১টার বেশি হবে, এখনও বিক্রি হয়নি। তবে অনেকে দাম বলছে। বাজার দর দেখছি, পোষালে ছেড়ে দেব’।

এখন পর্যন্ত পাইকাররা কত টাকা দাম বলেছে জানতে চাইলে কৃষক জাফর বলেন, ‘পাইকাররা কিছুক্ষণ পর পর এসে দাম বলছেন। একেক জন একেক দর বলেন। এখন পর্যন্ত তারা ১৫ হাজার টাকা বলেছেন। অর্থাৎ প্রতি পিস ১৫০ টাকা’।

Advertisement

কত টাকা হলে বিক্রি করবেন জিজ্ঞাসা করলে মুচকি হেঁসে তিনি বলেন, ‘আশার তো আর শেষ নেই। প্রতিপিস তরমুজ ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা আশা করি। তা তো আর পাব না। বাজারে যে দর ওঠবে তাই পাব। ঢাকার বাজারে যে তরমুজ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি করে আমরা তো তার অর্ধেক দামও পাই না। এত দাম চাইও না তবে ন্যায্যদাম পেলেই আমরা খুশি’।

জাফর আকন বলেন, ‘এ বছর দুইকানি (২০ বিঘা) জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি গাছে একটি তরমুজ পাওয়া যায়। তাই আট হাজার তরমুজ পাব বলে আশা করছি। প্রথমধাপে দুই হাজার এনেছি। আরও ৬ হাজার বিক্রি করতে পারব। যা এ মাসের (এপ্রিল) মধ্যেই বিক্রি করতে হবে। তরমুজ বেশি পাওয়া যায় বৈশাখ মাসে। তবে চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি পর্যন্ত তরমুজ ক্ষেত থেকে উঠানো হয়’।

রাঙ্গাবালির এ তরমুজ চাষি আরও বলেন, ‘এখন সব কিছুর খরচ বেড়েছে। দু্ইকানি জমিতে তরমুজ চাষে এবার ২ লাখ ২৭ হাজার খরচ হয়েছে। চার ভাগের এক ভাগ বিক্রি করতে এনেছি। প্রতিটি তরমুজ ঢাকায় আনতে ১৬ থেকে ১৭ টাকা খরচ হয়েছে। দাম না পেলে আমরা বাচঁবো কীভাবে’।

তিনি বলেন, ‘গত বছর তরমুজের ব্যবসা ভালো ছিল। খরচ বাদ দিয়ে ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা লাভ করেছি। এবারও তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে, আশা করছি লাভও ভালো হবে’।

Advertisement

তরমুজ ছাড়া অন্য কী চাষ করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তরমুজের বীজ রোপণ করার পর থেকে দুই মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। বাকি সময় জমিতে ধান, ডালসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করি। তবে তরমুজ চাষই আমাদের প্রধান লক্ষ্য’।

এসআই/এমএমজেড/পিআর