যানজট কমবে তো দূরের কথা রাজধানীর সীমা পেরিয়ে এখন তা সড়ক-মহাসড়কেও বিস্তৃত হচ্ছে। প্রতিদিনই মহাসড়কে লেগে থাকছে দীর্ঘ যানজট। ফলে দূরপাল্লার যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় মহাসড়কগুলো সচল রাখতে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
Advertisement
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রীরা দুইদিন ধরে ব্যাপক যানজটের দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শুক্রবার দিনভর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ৪২ কিলোমিটার এলাকা ও মেঘনা সেতু থেকে কাচপুর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের পর শনিবারও মহাসড়কের অবস্থা ছিল অভিন্ন। শুক্রবার রাতে যানজট কিছুটা কমে এলেও শনিবার ভোর থেকে আবার তীব্র আকার ধারণ করে। দাউদকান্দির টোলপ্লাজা থেকে যানজট গৌরিপুর স্টেশন ছাড়িয়ে যায়। যানজটের আটকা পড়ে যাত্রী ছাড়াও পণ্যবাহী যানবাহন, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও ভিআইপিদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মেঘনা ও দাউদকান্দি সেতুতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং দাউদকান্দির টোলপ্লাজা এলাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলে সংশ্লিষ্টদের অবৈধ বাণিজ্য এবং শনিবারও সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও বেপরোয়া গতিতে এলোমেলো গাড়ি চলাচলের কারণে যাত্রীরা ফোর লেনের তেমন সুফল পাচ্ছেন না। ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোর লেন সড়কের যানবাহনের গতি ডাবল লেনের মেঘনা গোমতী ব্রিজে গিয়ে যানজটে থেমে যাচ্ছে। তাই শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কের গোমতী ও মেঘনা সেতু কেন্দ্রিক শুরু হওয়া যানজট ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করে।
হাইওয়ে পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় যানবাহনের চাপ এমনিতেই বেশি। এছাড়াও দাউদকান্দি ও মেঘনা সেতুতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং টোলপ্লাজায় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলে ধীরগতির কারণে কিছু যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কেও প্রায়ই যানজট লেগে থাকছে। মহাসড়কের চারলেন উন্নীতকরণ কাজ চলার কারণে বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দক এবং রাস্তা সরু হওয়ার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই মহাসড়কে যানজট নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। এই দুইদিন মহাসড়ক মানেই চরম ভোগান্তির স্থান। এর কারণ হচ্ছে এই দুই দিনে মালবাহী পরিবহনের সংখ্যা বেশি থাকে, তাছাড়া শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ঢাকা থেকে মানুষ বিভিন্ন অঞ্চলে যায় আবার ফেরত যায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।
Advertisement
রাস্তার সংস্কার চলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দিনের পর দিন এজন্য যানজট সৃষ্টি হবে- এটা কোনো কাজের কথা হতে পারে না। এজন্য সংস্কার কাজ চলার পাশাপাশি গাড়ি চলাচলে যেন বিঘ্ন না ঘটে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। সংস্কার কাজও যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। টোল আদায়ে সময়ক্ষেপণের কারণেও যানজট হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। রাস্তায় গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে নষ্ট গাড়ি দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, রাজধানী ঢাকায় যানজটের কারণে দিনে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। এরসঙ্গে মহাসড়কের যানজট যুক্ত করলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। যানজট নিয়ে কথা কম হয়নি। এবার সময় এসেছে কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়ার।
এইচআর/এমএস
Advertisement