খেলাধুলা

অস্ট্রেলিয়ার কোচের দৌড়ে পন্টিং, ল্যাঙ্গার

বল টেম্পারিংয়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ আর সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ১ বছরের জন্য। ২ বছর নেতৃত্ব দিতে পারবেন না স্মিথ। এই দলটির সেরা পারফরমারই যে ছিলেন এ দু'জন। সঙ্গে ওপেনার ক্যামেরন বেনক্রফট ৯ মাস নিষিদ্ধ।

Advertisement

এতসব ঘটনায় শুরুতেই চুপচাপ ছিলেন কোচ ড্যারেন লেম্যান। তিনি পদ ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দেন; কিন্তু স্মিথের চোখের অশ্রু দেখে আর টিকে থাকতে পারলেন না। তিনিও ছেড়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচিংয়ের দায়িত্ব।

ড্যারেন লেম্যান সরে যাওয়ার পরই গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজি শেষ হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার কোচ হবেন কে? কার হাতে উঠবে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব? অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে এখন এটাই মূল আলোচনার বিষয়।

অস্ট্রেলিয়ার কোচ হওয়ার দৌড়ে শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকজনের নাম। টিম পেইনদের কোচ হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার। অনেক দিন ধরেই তার নাম শোনা যাচ্ছে লেম্যানের উত্তরসূরি হিসেবে। আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, ২০১৯-এর অ্যাসেজের পরে নাকি ল্যাঙ্গারের হাতেই দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথা ছিল লেম্যানের; কিন্তু তার অনেক আগেই বল-টেম্পারিং কেলেঙ্কারির জেরে লেম্যান পদত্যাগ করায় এখন সেই ল্যাঙ্গারের নামই ফের উঠে আসছে।

Advertisement

২০১৬ সালে লেম্যান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেতে না পারায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার এই সাবেক টেস্ট ক্রিকেটারই দলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন। এ ছাড়াও দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে একাধিক দলের কোচের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। পার্থ স্কোর্চার্সকে তিনবার বিগব্যাশ লিগ চ্যাম্পিয়ন করেছেন তিনি। এই অভিজ্ঞতার জন্যই ল্যাঙ্গারকে এগিয়ে রাখা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।

জাস্টিন ল্যাঙ্গারের পর এই পদের জন্য সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং। এর আগে পুরো সময়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্ব নিতে না চাইলেও পরে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন তিনি। গত বছর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লেম্যানের সহকারী হিসেবে দলের সঙ্গে ছিলেন।

সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ত্রিদেশীয় সিরিজেও একই ভূমিকায় দেখা যায় পন্টিংকে। আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া পন্টিংকে এবার সহকারী থেকে প্রধান কোচের পদেও আনা হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা।

তবে গত বছর থেকে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে যে দুই ফরম্যাচের জন্য আলাদা কোচের ভাবনা শুরু হয়েছে, তাতে এই দু’জনকে লাল বলের ও সাদা বলের ক্রিকেটের দায়িত্ব আলাদাভাবে দেওয়া হতেও পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। সত্যিই সে রকম হলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে কোচিং করাতে রাজি আছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে আগেই জানিয়ে রেখেছেন পন্টিং।

Advertisement

পন্টিং-ল্যাঙ্গার ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার কোচ হওয়ার দৌড়ে নাম শোনা যাচ্ছে জ্যাসন গিলেস্পিরও। এ বছর বিগব্যাশ লিগে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকারকে প্রথম শিরোপা এনে দেওয়ার পেছনে এই সাবেক পেসারের ভূমিকা অনেক। অতীতে তিনি অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলের সহকারী কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন। আপাতত ইংলিশ কাউন্টি সাসেক্সের তিন বছরের চুক্তির প্রস্তাব পেলেও জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার আশায় এই চুক্তিতে এখনও সই করেননি। ২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের কোচের দৌড়েও ছিলেন তিনি; কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রেভর বেলিসই জেতেন সেই দৌড়ে।

এ বার অস্ট্রেলিয়ার কোচ হওয়ার দৌড়েও বেইলিসের নাম শোনা যাচ্ছে। সঙ্গে ডেভিড সাকের, ব্র্যাড হাডিন, ক্রিস রজার্সের নামও উঠছে; কিন্তু এত নামের ভিড়ে শেষ পর্যন্ত কে যে কোচ হন, সেটাই দেখার বিষয় এখন।

আইএইচএস/জেআইএম