দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পর সিডনিতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে কান্না চেপে রাখতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্বের পদ থেকে বহিস্কার হওয়া স্টিভেন স্মিথ। তার কান্না ধরে রাখতে পারলেন না সহ-অধিনায়কত্বের পদ হারানো এবং এক বছর নিষিদ্ধ ডেভিড ওয়ার্নারও। সংবাদ সম্মেলনে অঝোর ধারায় কাঁদলেন তিনি। ওয়ার্নারের চোখের পানি আবেগে ভাসিয়েছে উপস্থিত সবাইকে।
Advertisement
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ওয়র্নাারকে দেখা গেছে স্ত্রী ক্যান্ডিস, দুই সন্তান আইভি এবং ইন্দির সঙ্গে। সেখান দেখা গেছে ওয়ার্নারের স্ত্রী ক্যান্ডিস কাঁদছেন। সংবাদ সম্মেলনেও যখন কথা বলতে গিয়ে কাঁদছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, তখন দর্শক সারিতে বসা তার স্ত্রীও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না। পাশে বসা আরেকজন তাকে সহমর্মিতা দেখাচ্ছেন, বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন।
কাঁদতে কাঁদতেই এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় থাকা বিধ্বস্ত ওয়ার্নার জানিয়ে দিলেন, আর হয়ত কোনোদিন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন না।
শনিবার সিডনির সংবাদ সম্মেলনে খুবই বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার সদ্য সাবেক হওয়া সহ-অধিনায়ককে। বেশ কয়েকবার চোখ নামিয়ে ফেলতে এবং চোখ মুছতেও দেখা গেছে তাকে। শুধু তাই নয়, মাঝে দেখা গেলো অঝোর ধারায় কাঁদছেন তিনি। চোখের পানি বাধ মানছিল না। ভাসিয়ে দিচ্ছিল তার চোখ। তবে লিখিত বক্তব্যের বাইরে প্রায় কোনও প্রশ্নেরই জবাব দেননি ওয়ার্নার। দীর্ঘ দু’ঘণ্টার বৈঠকে বারবার ক্ষমা চেয়েছেন দর্শক থেকে পরিবার, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া থেকে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা- সবার কাছে।
Advertisement
বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পেছনে দলের আর কে কে জড়িত, বা দলের কোন কোন সদস্য এ বিষয়ে জানতেন- সে সব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ওয়ার্নার। পুরো ঘটনায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাকে বলির পাঁঠা বানাচ্ছে কি না- সে প্রশ্নেরও কোনও উত্তর দেননি ওয়ার্নার। বল টেম্পারিংয়ের সঙ্গে জড়িত তিনজনের মধ্যে ওয়ার্নারই হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি শাস্তি পাওয়া ক্রিকেটার। এক বছর নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে আর কোনোদিন অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাকে।
সংবাদ সম্মেলনে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার কারণ টুইটারে লেখেন ওয়ার্নার। সেখানে তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টাই এখন একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলছে। তদন্ত করছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আমি নিজেও বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছি। এ অবস্থায় এই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আর জটিলতা বাড়াতে চাইনি। দয়া করে আমায় ভুল বুঝবেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্নার বলেন, ‘সব সমর্থক এবং সব ক্রিকেটপ্রেমীর প্রতি... আমি খুব কড়জোরে ক্ষমা চাইছি সবার কাছে। যারা আমার দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সমর্থন ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, বিশ্বাসভঙ্গ বা প্রতারণা যা-ই বলুন, এজন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। এজন্য অনুতপ্ত। আশা করি, ফিরে এসে আবারও সবার মন জয় করতে পারব।’
দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে অনেক কিছু বললেও ওয়ার্নারের যে বক্তব্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তা হল তার ‘ইস্তফা’। বিষণ্ণ গলায় প্রাক্তন অসি ওপেনার বললেন, ‘আমি হয়ত আর কোনোদিন দেশের হয়ে খেলতে পারব না। অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আমি আজও দেশের হয়ে খেলতে চাই। কিন্তু বাস্তবটা হল হয়ত আর কোনও দিনই আমি দেশের প্রতিনিধিত্ব করব না।’
Advertisement
আইএইচএস/আরআইপি