গুঞ্জনে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
Advertisement
শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভীকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে...’ এমন সময় রিজভী আহমেদ তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘কোনো গুঞ্জনে কান দেবেন না। গুঞ্জন সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে, গুমকে ফৌজদারী অপরাধ গণ্য করতে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার ও তাদের ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সলিডারিটি গ্রুপ ফর বাংলাদেশ। এক বিবৃতিতে তারা গণগ্রেফতার করা বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সরকারের প্রতি তারা সুপারিশ করেছে। আহ্বান জানানো হয়েছে, ফৌজদারি বিচার বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। সুপারিশ করা হয়েছে, জোরপূর্বক গুমকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর ধারাবাহিকভাবে নির্যাতন চলছে। সেই সঙ্গে সরকারের সমালোচকদের ওপর ক্রমাগত আক্রমণ হচ্ছে এবং মত প্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে আইন তৈরি হচ্ছে। এশিয়ান ফেডারেশন এগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপেয়ারেন্সেস (এএফএডি), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার (এএলআরসি), সিভিকাস গ্লোবাল এলায়েন্স, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ), অধিকার, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন এগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি)-এর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে সলিডারিটি গ্রুপ ফর বাংলাদেশ। এ গ্রুপে ২০১৮ সালে যোগ দিয়েছে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন নামে একটি গ্রুপ। সলিডারিটি গ্রুপ ফর বাংলাদেশ ২২ মার্চ এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরেছে। কড়া নিন্দা জানিয়েছে গণগ্রেফতারের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের মৃত্যু ও নির্যাতনে গভীর উদ্বগ প্রকাশ করেছে।’
Advertisement
তিনি বলেন, এই যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়।’
রিজভী দাবি করেন, ‘মানবধিকার সংগঠনগুলোর বিবৃতিতে বাংলাদেশের মানবধিকার পরিস্থিতির যে ভযাবহতা তুলে ধরা হয়েছে বাস্তবে ভয়াবহতা আরও ব্যাপক। শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি চেয়ারপারসন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জাল নথি তৈরি করে মিথ্যা সাজানো মামলায় যেভাবে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে, যেভাবে সরকারি নির্দেশে জামিন স্থগিত করে রাখা হয়েছে তা মানবধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন। শুধুমাত্র শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই সরকারি সহিংসতার ব্যাপক রুপ ধারণ করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে লোহার শিকলে বন্দি করে বাংলাদেশকে অন্ধকার শ্বাসরোধী পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে সরকারের রোষানলের শিকার জনগণের অধিকার আদায়ে অবিচল ও প্রত্যয়দৃঢ় নেত্রী কারাবন্দি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সারাদেশে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা তাদের ওপর হামলা করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী আহমেদ। তিনি এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
Advertisement
কেএইচ/এমবিআর/এমএস