কুমিল্লার মুরাদনগরের কাজিয়াতল গ্রামে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে শামসুদ্দিন মনির (২৯) নামের এক যুবককে হাত-পা-চোখ বেঁধে ও পায়ের রগ কেটে হত্যার ঘটনায় গৃহকত্রী নাছিমা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।রোববার তাকে কুমিল্লার আমলী আদালত-৮ এর বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রা চক্রবর্তীর আদালতে হাজির করার পর তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে গ্রেফতার হওয়া মসজিদের ঈমাম আবুল হাসানের (২৮) জবানবন্দী এবং মামলার তদন্তে ঘটনার সঙ্গে গৃহকত্রী নাছিমার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত নাছিমা আদালতে দেয়া তার জবাববন্দীতে জানান, মনির গত ১৪ জুলাই ভোর রাতে বাড়ির উঠানে এসে উচ্চস্বরে গালাগালি করে এক পর্যায়ে ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়, তখন তিনি (নাছিমা) মসজিদের ঈমামের সহায়তায় মনিরকে আটক করে রশি দিয়ে তার হাত পা বেঁধে ফেলেন। পরবর্তীতে বাড়ির পাশের মসজিদের মাইকে ঈমাম আবুল হাসান ডাকাত আটকের ঘোষণা দেয়ার পর গ্রামের লোকজন ছুটে এসে মনিরকে মারধর করে হত্যা করে। জবানবন্দীতে নাছিমা হত্যার মিশনে অংশ নেয়া গ্রামের লোকদের নাম প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন।উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে কাজিয়াতল গ্রামের প্রবাস ফেরৎ শামসুদ্দিন মনির বিদেশি টাকা ফেরৎ পেতে একই গ্রামের ময়নাল হোসেনের বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এ সময় গৃহকত্রী এবং ওই বাড়িতে অবস্থানরত মসজিদের ঈমামের সহায়তায় মনিরকে আটক করে মসজিদের মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিলে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্যাতন চালিয়ে ও পায়ের রগ কেটে তাকে হত্যা করে। পরে হত্যার চিত্র ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ছেলে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গৃহকর্তা ময়নাল হোসেন, আবদুল কুদ্দুস, মসজিদের ঈমাম আবুল হাছান, রুহুল আমিন মো. শরীফ ও নজরুল ইসলামকে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এর আগে পুলিশ মসজিদের ইমাম আবুল হাছানকে (২৮) তার নিজ বাড়ি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চরলহনিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ২৯ জুলাই রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য্য রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। কামাল উদ্দিন/এমএএস/এমআরআই
Advertisement