রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ায় গৃহকর্ত্রী আমেনা বেগম হত্যাকাণ্ডের ২২তম দিন পার হলেও হত্যার কোনো ক্লু পাচ্ছে না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেও সন্দেহভাজন কাউকে শনাক্তও করা যায়নি। তাই হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত বলেই ধারণা তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের।
Advertisement
গত ৮ মার্চ দুপুরে তেজগাঁওয়ের পশ্চিম নাখালপাড়ার ‘রসুল ভিলা’য় বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে ভেতর প্রবেশ করে গৃহকর্ত্রী আমেনা বেগমকে (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আমেনার গলার চেন ও হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি খুলে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ বাবু বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকাণ্ডটি সম্পূর্ণ ক্লুলেস। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোনো অস্ত্রও ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। তবে দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
Advertisement
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মো. আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে, হত্যাকারী শনাক্তে চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকারী খুব সতর্কতার সঙ্গে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আগে থেকেই বাড়ি ও বাড়ির মালিক সম্পর্কে তারা তথ্য সংগ্রহ করে। বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থল রেকির পর খুন করে থাকতে পারে। হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্যও অস্পষ্ট।
তিনি বলেন, আপাতত দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল কিনা এবং পরিবারের কেউ এ ঘটনায় জড়িত কিনা।
এছাড়া রাজধানীর দক্ষিণখানের সিরিয়াল কিলিংয়ের মত এখানেও কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Advertisement
‘আমরা নিহতের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বেশ কজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত তথ্য মেলেনি। এছাড়া আমেনা বেগমের পরিবার ও স্বজনের মোবাইল নম্বরের ‘কল ডিটেইলস রেকর্ড’ (সিডিআর) ধরেও তদন্ত করছি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, নিহতের বাড়ির আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখেছি, অধিকাংশ বাসায় সিসি ক্যামেরা নেই। যে কয়েকটা বাসায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে তার অধিকাংশই নষ্ট। কয়েকটি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এর কোনোটাই ওই ভবনটি কাভার করেনি। যে কারণে সন্দেহভাজন কাউকে শনাক্তও করা যায়নি।
নিহতের ছোট ছেলে রাসেল আহমেদ বাবু জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশ আসছে কথা বলছে। ডেকে নিয়ে যাচ্ছে। কথা বলছি, তথ্য দিয়ে নানাভাবে পুলিশের তদন্তে সহায়তা করছি। কিন্তু এখনো আমরা জানতে পারিনি কে বা কারা কেন আমার মাকে হত্যা করলো। মায়ের হত্যাকারীর বিচার চাই।
আমেনা বেগমের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না দাবি করে রাসেল আহমেদ বলেন, নাখালপাড়ার আশেপাশেই আত্মীয়-স্বজনরা থাকেন। কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। এরপরেও কেন হত্যা করা হলো বুঝতে পারছি না।
জেইউ/এএইচ/জেআইএম