জাতীয়

উদ্যোগেও সম্প্রসারিত হচ্ছে না মেরিন ক্যাডেটদের কর্মক্ষেত্র

উদ্যোগ নিলেও সম্প্রসারিত হচ্ছে না মেরিন ক্যাডেটদের কর্মক্ষেত্র। কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিদেশ ঘুরলেও ফল মিলছে সামান্যই। ফলে মেরিন একাডেমিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চাকরি নিশ্চত করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।

Advertisement

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৫২তম বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, তালুকদার আব্দুল খালেক, মো. আব্দুল হাই, মো. হাবিবর রহমান, রণজিৎ কুমার রায় এবং মমতাজ বেগম অ্যাডভোকেট উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কার্যক্রম এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

বৈঠকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দাভাব ও দেশীয় বাণিজ্যিক নৌ-বহরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রশিক্ষণপ্রপ্তদের চাকরি পাওয়া দুরূহ ব্যাপার বলে স্বীকার করছে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি।

Advertisement

চার্টার্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার কমান্ড্যান্ট নৌ প্রকৌশলী সাজিদ হোসেন স্বাক্ষরিত বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, ১৯৬২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার ৩৮৮ ক্যাডেট (নটিক্যাল/ইঞ্জিনিয়ারিং) মেরিন একাডেমি থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেছেন। এছাড়া ১৯৮০ সালের পর থেকে বিভিন্ন পেশাদার প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে আরও প্রায় ৪০ হাজারের বেশি মেরিন অফিসার ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চতর ও সহায়ক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু দিন দিন কাজের ক্ষেত্র কমে যাচ্ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেরিন একাডেমির ক্যাডেটদের চাকরি সম্প্রসারণে সিঙ্গাপুর, ইউকে, মরিশাস, দক্ষিণ কোরিয়া, গ্রিস মোজাম্বিকসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নিবিড় ও নিরবচ্ছিন্ন এবং প্রত্যক্ষ যোগাযোগের জন্য মন্ত্রণালয় ও একাডেমি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমটি ইতিপূর্বে দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। এর ফলে কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরিও হয়েছে। আর তাদের চাকরি সম্প্রসারণে তিনটি সুপারিশও করেছে টিমটি।

এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে দেশীয় বাণিজ্যিক জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ফ্লাগ প্রটেকশন অর্ডিনেন্সের সঠিক বাস্তবায়ন করা। কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে বিশ্বের বড় বড় শিপিং কোম্পানির মালিক পক্ষের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। আর বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে নাবিকদের ভিসা জটিলতার নিরসন করা। প্রয়োজনে নাবিকদের জন্য বৈমানিকদের মতো ভিন্নতর ভিসা পদ্ধতি অনুসরণের ব্যবস্থা নেয়ার কথাও সুপারিশে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম জাগো নিউজকে বলেন, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত একাডেমিটি মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তান সরকার অভিভাবকহীন অবস্থায় রেখে এর কার্যক্রম করাচিতে স্থানান্তর করে। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিন একাডেমি বাংলাদেশ নামে পুনরায় চালু করেন। তবে এখান থেকে পাস করা ক্যাডেটরা আগের মতো চাকরি পাচ্ছেন না। তারা যেন বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ, মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

এইচএস/এএইচ/এমএস