চার মাস ধরে বকেয়া বেতন বোনাস পরিশোধ না করেই সোয়ান গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করায় টানা ১৫ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা। গত ১২ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় এই শ্রমিকরা। ঈদের দিনও পরিবার পরিজন ছাড়া আন্দোলনের মাধ্যমে কেটেছে তাদের সময়।জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচিটি ‘গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের’ ব্যানারে পরিচালিত হচ্ছে। জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের কাছে সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ নিয়ে কারখানাটি পরিচালনা করে আসছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। তিন মাস আগে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারা গেলে শ্রমিকদের পাওনা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়।গার্মেন্টটি বেআইনিভাবে চার মাস ধরে বন্ধ রেখেছেন মালিক কর্তৃপক্ষ। কোনো বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। ঈদের বোনাসও পাওনা রয়েছে। তাই পাওনা আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সোয়ান গার্মেন্টের কর্মী রোকাসানা আক্তার বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে গার্মেন্টে কাজ করছি। আমাদের সংসার চলে এইখানে কাজের টাকায়। এখন খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে।’বর্তমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে থেকে হয়তবা নতুন প্রস্তাব পাবো, আর তার ওপর ভিত্তি করেই আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।তেল গ্যাস বিদ্যুৎ রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ বলেন, মালিক পক্ষরা ব্যাপক মুনাফা অর্জন করে কিন্তু শ্রমিকদের সামান্য পারিশ্রমিক বাকি রাখে। তাই ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান।অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, যারা শ্রমিককে বঞ্চিত করছে তারা মনে করেছিলো এই আন্দোলনে কেউ থাকবেনা, কিন্তু শ্রমিকরা শপথ নিয়েছে দাবি আদায় না করে তারা বাড়ি ফিরে যাবে না। তিনি আরো বলেন- শুধু ১৫ দিন নয়, ১৫ মাস অতিবাহিত হলেও সোয়ান শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায় করে ছাড়বে।শ্রমিক নেতারা বলেন, তের শতাধিক শ্রমিক অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএ ঘেরাও করে সকল জায়গায় আবেদন করে ও ধর্ণা দিয়েও সমাধান হচ্ছে না। এমতাবস্থায় কঠোর আন্দোলন ব্যতীত শ্রমিকদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।’অবস্থান কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সাদেকুর রহমান শামীম, শ্রমিক নেতা জিয়াউল কবির খোকন, ইকবার হোসেন, কে এম মিন্টু, এম এ শহীন, শাহজাহান মিয়া, মঞ্জুর মঈন প্রমুখ।এএসএস/এসএইচএস/এমআরআই
Advertisement