শিক্ষা

আইডিয়ালের শিক্ষকের পিটুনিতে ৯ এইচএসসি পরীক্ষার্থী রক্তাক্ত

বন্ধুর জন্মদিন পালন করায় নয় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সোহেল কলেজ হোস্টেলের দায়িত্বে আছেন। গত সোমবার রাত ১২টার পর এই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত এক ছাত্র জানায়, আমরা ৯-১০ জন বন্ধু মিলে ২৬ মার্চ রাত ১২টার সময় হোস্টেলের নিচে এক বন্ধুর জন্মদিন পালন করছিলাম। জন্মদিন পালন করতে গেলে একটু হই-হুল্লোড় করছিলাম, এমন সময় সোহেল স্যার হঠাৎ এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে তিনি আমাদের সিরিয়ালি দাঁড় করিয়ে রড দিয়ে পেটান। আর এ ঘটনার ভিডিও করেন স্যারের সহযোগী আনোয়ার মোল্লা।

সে আরও বলেছে, ‘এমন ঘটনা তিনি (মনিরুল ইসলাম সোহেল) প্রায়ই ঘটান। আমাদের এভাবে অযথাই মারধর করেন। কিন্তু এবার অতিরিক্ত করেছেন। এক বন্ধুর হাত কেটে গেছে, ব্যাপক রক্ত ঝরেছে। কয়েকজনের হাতে-পায়ে রড দিয়ে মারার কারণে কালো দাগ হয়ে গেছে। নখ দিয়ে আচড় দেয়ায় মুখের ও কানের কাছে কেটে গেছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মনিরুল ইসলাম সোহেল কলেজের পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের শিক্ষক। তিনি কলেজটির অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আহমদের ভাতিজা। রয়েছেন ছাত্র হোস্টেলের দায়িত্বে।

Advertisement

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মনিরুল ইসলাম সোহেলকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আহমদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেদিন স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হলো এটা সেদিন রাতের ঘটনা। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। ছেলেরা একটু বেশি হই-হুল্লোড় করার সময় শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সোহেল এসে তাদের বাধা দেয়। ডিম ও আটা-ময়দা ছোড়াছুড়ি করছিল তারা। এজন্য সোহেল তাদের বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মেরেছে। তারপর অবশ্য আমি ছাত্রদের ডেকে শিক্ষকের সঙ্গে মিলমিশ করিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছি। এটি শুধু ভুল বোঝাবুঝি বলেই প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক আমাদের কলেজের পার্টটাইম শিক্ষক। তাকে আর কলেজে না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, অধ্যক্ষ তাদের ডেকে ধমক দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে মানা করেছেন।

Advertisement

শিক্ষার্থীরা বলেছে, ‘আমরা বিচার চাই। এ ঘটনার আগের দিনই আমাদের সংবর্ধনা দিয়ে বিদায় দেয়া হয়। কারণ আমরা এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বিদায় অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ বলেন, আমরা তাদের সন্তানের মতো। অনেক ভালোবাসেন আমাদের। এই তাদের ভালোবাসার নমুনা? স্যারের নিজের সন্তানকে এভাবে পেটালে উনি কি এমন চুপ করে থাকতেন- বলে প্রশ্ন তোলেন তারা।

এমএইচএম/জেডএ/আরআইপি