শিক্ষা

অনার্স-মাস্টার্সের শিক্ষক নিয়োগ দেবে এনটিআরসিএ

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে এ স্তরের নিয়োগ সুপারিশ এনটিআরসিএ (জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) থেকে করা হবে। মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহবার হোসাইন সভাপতিত্বে সভাটি হয়েছে। সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-১) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) জাবেদ আহমেদ, এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান, মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার উপস্থিত কর্মকর্তাদের কাছে জানা গেছে, বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণি শিক্ষক এনটিআরটিএর মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী অনুমোদন না দেয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত বলা যাবে না। এ বিষয়ে আবারও বৈঠক হবে। সেখানে চূড়ান্ত হলে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে চালু করা হবে।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে এনটিআরসিএ আইন সংশোধন করা হয়। এরপর থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও ডিগ্রি স্তরে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগের ফলে যোগ্য শিক্ষক পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হয়ে যায় গভর্নিং বডির (জিবি) নিয়োগ বাণিজ্য। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজের অনার্স ও মাস্টার্স শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা জিবির হাতেই থেকে যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানের জিবির সভাপতি ও সদস্যদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় শিক্ষার্থীরা মানসম্মত উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন।

Advertisement

সভার কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সাল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে আসছে। তবে বেসরকারি শিক্ষকদের জনবল কাঠামোভুক্ত করা হয়নি। বেতন ভাতা না পেয়ে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ফলে সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীকে সুষ্ঠুভাবে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। জিবি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিসহ গঠিত কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ফলে শিক্ষকদের সমস্যা দিন দিন তীব্র হচ্ছে। বর্তমান নিয়মে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত অতিরিক্ত সচিব চৌধুরি মুফাত আহমেদ বলেন, এমপিও’র মাধ্যমে সরকার যখন অর্থ দেবে, তখন বাছাই করে মেধাবি শিক্ষক নিতে সমস্যা নেই। তাই সভায় পাল্টাপাল্টি মতামত এলেও কেন্দ্রীয়ভাবে কলেজ পর্যায়ে নিয়োগের পাল্লা ভারি ছিল বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণির শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে হলে এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধন করতে হবে। অর্থের বিষয় জড়িত থাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়েরও অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

এমএইচএম/এমএমজেড/পিআর

Advertisement