জাতীয়

পানি সংকটের সমাধান নিজেদেরই করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর নাব্যতা বাড়ানোর জন্য যেমন- ড্রেজিং, বৃষ্টি ও বর্ষার পানি ধরে রাখার মাধ্যমে পানি সংকটের সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো ওপর নির্ভরশীল নয়, নিজেদের ব্যবস্থাটা নিজেকেই করতে হবে। বর্ষাকালে যে বিশাল জলরাশি আসে সেটা আমরা কিভাবে ধরে রাখতে পারি। আমাদের সেই পরিকল্পনা আগে নিয়ে নিজেদেরটা দেখতে হবে।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পানি দিবস-২০১৮ উপলক্ষে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও আমাদের দেশে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। নদী ড্রেজিংয়ে নয় বরং নদীর পাড় বাঁধাই এবং রাস্তা নির্মাণ বা সেখানকার লোকজনের জন্য পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রকল্পে। যেটি মূলত তাদের কাজ নয়। তিনি বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজ নদী ড্রেজিং এবং পলি ব্যবস্থাপনা।

গঙ্গার পানি চুক্তির পরই তার সরকার নদী খননের দিকে সব থেকে বেশি দৃষ্টি দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর পর কয়েকটি ড্রেজার কিনে জাতির পিতা এ ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করেছিলেন। এরপর ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা কখনও নদীগুলো খননের কোনো উদ্যাগই নেয়নি।

Advertisement

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত পানিসম্পদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং সচিবকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মূল দায়িত্বটা কি? নদীকে কিভাবে রক্ষা করা যায়, নদীর নাব্যতা বাড়ানো যায়, নদীর ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো যায় এবং এই নদী আমাদের জন্য অভিশাপ নয়। আশীর্বাদ হিসেবে যেনো নিজের অস্তিত্ব ঠিক থাকতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া। নদী ভাঙন রোধ এটাও কিন্তু সব থেকে বড় কাজ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক। মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কবির বিন আনোয়ার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ড. মো. মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে দেশের পানি ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।

আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সমস্যা থাকার প্রসঙ্গ স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৭শ’ নদী এবং ভারতের সঙ্গে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে, এই নদীগুলো হিমালয় থেকে এসেছে ভারত হয়ে। এ নদীগুলো নিয়ে আমাদের ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেটার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করা।

‘৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ভারতের কাছ থেকে এই গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে সক্ষম হয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক পানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যদিও ভারতের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পানির হিস্যা নিয়ে এখনও ঝামেলা চলছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

তিস্তাা ব্যারেজ করলেও তার ভবিষ্যত পরিবেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে চিন্তা করা হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ব্যারেজটা করার আগেই চিন্তা করা উচিত ছিল যে, আমরা ভাটির দেশে বসবাস করি। এখন সেই তিস্তার পানি নিয়ে আমাদের সমস্যা চলছে।

ভারতের সঙ্গে নদী সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে তার সরকার ইতোমধ্যেই অনেক কাজ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) গঠন করা হয়েছে, অন্যান্য নদী নিয়েও আলোচনা চলছে এবং তিস্তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

এফএইচএস/জেএইচ/আরআইপি