জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে আরও বাড়ানোর জন্য করা আবেদন শুনানি বুধবার করতে আদালতে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।
Advertisement
মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি এ কে এম সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সহযোগী আসামিদের ১০ বছরের সাজা অথচ মূল আসামি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন দুদক আইনজীবীরা। সেই সঙ্গে গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দুদকের পক্ষে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়নোর আপিল আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
সেদিন খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেন বিচারিক আদালত। দুদক মনে করে, খালেদা জিয়া মূল আসামি অথচ তার চেয়ে সহযোগীদের বেশি সাজা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার এ সাজা অপর্যাপ্ত। তার সাজার অংশটুকু আমরা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছি।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এ মামলার মূল আসামি খালেদা জিয়া। তাকে আদালত পাঁচ বছর সাজা দিয়েছেন অথচ তার সহযোগী অপরাধীদের ১০ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। বিচারিক আদালত যদি সবাইকে ১০ বছরের সাজা দিত অথবা সবাইকে পাঁচ বছরের সাজা দিত তাহলে আমরা আবেদন করতাম না। যদি খালেদা জিয়াকেও ১০ বছরের সাজা দিত তাহলেও কোনো আবেদন করতাম না। সহযোগীদের সাজা কম হতে পারত। এটিকেও আমরা আপিলে গ্রাউন্ড হিসেবে দেখিয়েছি।’
এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের অভিযোগ, এ মামলায় সরকার হস্তক্ষেপ করছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘অনেকে বলছেন সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে দুদক থেকে এ আবেদন করেছে। এটা মোটেও ঠিক নয়। আপনারা জানেন, যখন আপিলে জামিনের শুনানি হয় তখন আমরা বলেছি, জাজমেন্টের এ সাজায় আমরা সন্তুষ্ট নই। এটা অপর্যাপ্ত সাজা। আদালত আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিল, (হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকালে) আমরা কিছু করেছি (সাজার বিরুদ্ধে দুদকের আপিল) কিনা? তখন আমরা আদালতকে বলেছিলাম, বিষয়টি দুদক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। দুদক পুরো জাজমেন্ট ঘাটাঘাটি করবে। পরবর্তীতে দুদক সিদ্ধান্ত নেবে। সেই আবেদনটি এফিডেভিট সম্পন্ন করা হয়েছে।’
খালেদা জিয়াকে তো বেশকিছু যুক্তি বিবেচনায় নিয়ে বিচারিক আদালত সাজা দিয়েছিলেন- এ বিষয়ে খুরশীদ আলম খানের বক্তব্য হলো, ‘আপিল আবেদনে বিচারিক আদালতের সেই গ্রাউন্ডগুলোকেই চ্যালেঞ্জ করেছি। ওই গ্রাউন্ডে অপর্যাপ্ত সাজা দেয়া যায় না। আইন এটা অনুমোদন করে না।’
আপনারা আপিলে কী পরিমাণ সাজা প্রার্থনা করেছেন- জানতে চাইলে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘নির্দিষ্ট পরিমাণ সাজা চেয়ে আবেদন করিনি। তবে অপর্যাপ্ত সাজা হওয়ায় বিরুদ্ধে আবেদন করেছি। এটা যখন শুনানি হবে, তখন দেখা যাবে একটি আইনে যতগুলো সাজা থাকে আদালত চাইলে তার বেশি বা কমও সাজা প্রদান করতে পারেন। অথবা খালাসও দিতে পারেন। এটা মামলার বিষয়বস্তু ও ঘটনার ওপর নির্ভর করবে।’
Advertisement
বিএনপির আইনজীবীরা আপিল আবেদনটি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন- এর উত্তরে দুদকের এ আইনজীবী বলেন, ‘দুদক সিদ্ধান্ত নিয়ে আপিল করেছে। এটা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই। এখন আমাদের বক্তব্য হলো, এটা ধোপে টিকবে কিনা, তা আদালত দেখবেন।’
এফএইচ/এমএএস/এমবিআর/পিআর