জাতীয়

শাহীনের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের অবসান

নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে আহত শাহীন বেপারী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি... রাজিউন)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বেলা ৪টা ৩০ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। আহত হওয়ার পর ১৫ দিন ধরে বেঁচে থাকার লড়াই করে অবশেষে তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

Advertisement

সোমবার দুপুর ২টার দিকে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢামেক বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (অাইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এরপর ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলেন চিকিৎসকরা।

বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তার মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা। ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সোমবার জাগো নিউজকে বলেন, হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটায় চিকিৎসকরা তাকে সর্বোচ্চ অবজারভেশনে রাখেন।

শাহীন বেপারীর অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে তার স্বজনরা বার্ন ইউনিটে অাসেন। তারা চিকিৎসকদের কাছে বারবার অনুরোধ করছিলেন শাহীনকে উন্নত চিকিৎসায় দেশের বাইরে নেয়ার জন্য।

Advertisement

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৮ মার্চ তাকে দেশে আনা হয়েছিল। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে শাহীনকে দেশে আনা হয়েছিল।

২১ মার্চ প্রথম দফায় এবং ২৫ মার্চ দ্বিতীয় দফায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর থেকে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (অাইসিইউ) রাখা হয়েছিল। শাহীন বেপারী বাংলাদেশ শান্তি সংঘের সদস্য এবং পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকার বিক্রমপুর গার্ডেন সিটিতে মেসার্স করিম অ্যান্ড সন্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কোম্পানি থেকে বার্ষিক আনন্দভ্রমণে নেপাল গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বান্দেগাঁও গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে শাহীন বেপারী। স্ত্রী-কন্যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বসবাস করতেন তিনি।

গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ ওইদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি নিহত হন নেপালেই। আর আহত হন ১০ বাংলাদেশি। প্রথমে আহতদের নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় আনা হয়। কয়েকজনকে নেয়া হয় সিঙ্গাপুর।

Advertisement

উড়োজাহাজটিতে ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দুই শিশু ছিল।

জেডএ/পিআর