লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ক্যাম্পের হাট এলাকায় মাল্টিপারপাসের টাকা লেনদেন নিয়ে দুই হিন্দু পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ ও বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা শুক্রবার বিকেলে পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে। এ নিয়ে সাধারণ লোকজনের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ক্যাম্পের হাট এলাকায় ১৯ জুলাই মাল্টিপারপাসের টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে শ্যামল মিশ্র ও কার্তিক সরকারের পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় শ্যামলের বসতঘর ভাঙচুর ও উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনার পরদিন শ্যামল বাদী হয়ে জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় দক্ষিণ চর আবাবিল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১২ জনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় কার্তিক ও তার পরিবারের কোনো সদস্যকে আসামি করা হয়নি।অন্যদিকে একই দিন কার্তিক সরকার বাদী হয়ে শ্যামল মিশ্রের পরিবারের ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এতে পাওনা টাকা চাইতে গেলে মেয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ আনা হয়।হিন্দু পরিবারের মধ্যে মারামারির ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে যুবলীগ নেতা তাজুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে দাবি করে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ হাওলাদারসহ তাজুর অনুসারীরা। তারা শুক্রবার বিকেলে মামলা প্রত্যাহার করার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে। রায়পুর-হায়দরগঞ্জ সড়কের মজু মোল্লা স্টেশন এলাকায় এ অবরোধ করা হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন শ্লোগান দেন।অন্যদিকে তাজুর নেতৃত্বে হামলা-লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে একই সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুন্সির আহ্বানে ‘ক্যাম্পেরহাট সম্মিলিত নাগরিক সমাজ ’ ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। সেখানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান মুন্সি, বিজয় কৃঞ কীর্ত্তনিয়া, প্রেমধন মজুমদার ও প্রবল কৃঞ মজুমদার প্রমুখ।যুবলীগ নেতা তাজুল ইসলাম বলেন, হিন্দু দুই পরিবারের মধ্যে মারামারির খবর শুনে ঘটনাস্থল যাই। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকেসহ এলাকার কয়েকজন নিরীহ মুসলিমের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। অথচ হিন্দু যাদের সাথে ঘটনা, তারা কাউকে আসামি করা হয়নি। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত স্থানীয় নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।আওয়ামীলীগ নেতা মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, তাজুর নেতেৃত্বে শ্যামলের বাড়িতে অতর্কিত হামলা- লুটপাট চালানো হয়েছে। তাজু ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ আন্দোলনে নেমেছে। ভবিষ্যতে আরো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।এ ব্যাপারে রায়পুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা আনোয়ার বলেন, ক্যাম্পের হাটের ঘটনায় দুই পক্ষের মামলার তদন্ত চলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।কাজল কায়েস/এসএস/পিআর
Advertisement