জাতীয়

জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার শ্রদ্ধা : নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয়

স্বাধীনতা দিবসে শহীদদের সম্মান জানাতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজারও মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তব্ক অর্পণ করেছেন। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। এ সময় অনেকেই নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

Advertisement

সোমবার সকাল ৫টা ৫৮ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ শ্রদ্ধা জানানোর পরই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সৌধ। সকাল থেকে মানুষের ঢল নামে সেখানে। বেলা যত গড়াতে থাকে ততই ভিড় বাড়তে থাকতে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। পথে আটকে পড়া মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে চলে যাওয়ার পরই তারা ছুটে যান স্মৃতিসৌধে। সকালের সূর্য বাংলার সবুজ জমিনকে আলোকিত করার পাশাপাশি স্মৃতিসৌধের বেদি নানা রঙ আর ঘ্রাণের ফুলে ফুলে ভরে যায়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ায়দুল কাদর ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুই দলের সিনিয়র নেতারা আলাদা আলাদভাবে সেখানে শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগ ছাড়াও দলটির অঙ্গসংগঠন, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সৌধ। লাল সবুজ পতাকা ওড়তে থাকে হাতে হাতে। শিশু কিশোরদের গালে আঁকা জাতীয় পতাকা, স্মৃতিসৌধ সবার মধ্যে অন্য ধরনের অনুভূতি জাগায়।

Advertisement

ধানমন্ডি থেকে আগত বেলাল হোসেন তার পরিবার নিয়ে এসেছিলেন। তার বড় মেয়ে অদৃতা হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, দুর্নীতিমুক্ত নতুন দেশ গড়ার শপথ নিয়ে স্মৃতিসৌধে এসেছি। আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। স্মৃতিসৌধে রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও এসেছিলেন।

ঢাকা কলেজের একাদশের ছাত্র সাইফুজ্জামান রুকন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না। সবার সহযোগিতা নিয়ে দেশ এগিয়ে যাক এটাই প্রত্যাশা।

ইডেন মহিলা কলেজের সীমা আক্তার বলেন, স্মৃতিসৌধে আসলে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের বেশি বেশি করে মনে পড়ে। তাদের অবদানের কথা ভেবেই এখানে এসেছি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ’র নেতৃত্বে ডিআরইউ সদস্যরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

Advertisement

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ জাগো নিউজকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আরও কাজ করতে হবে। উন্নত দেশ গড়তে সবাইকে শপথ নিতে হবে।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্মরণে স্বাধীনতা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পথে শুরু হয়েছে ‘শোক থেকে শক্তি’ নামে পদযাত্রা। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সহায়তায় ভোরে শুরু হওয়া এ পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিজড়িত বিভিন্ন বধ্যভূমি ও স্মৃতিপীঠ ঘুরে তারা সন্ধ্যায় পৌঁছাবেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে। পর্বতারোহীদের সংগঠন ‘অভিযাত্রী’ ২০১৩ সাল থেকে এ পদযাত্রার আয়োজন করে আসছে ।

২০১৬ সালে এর সঙ্গে যুক্ত হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। গতবার থেকে কর্মসূচির অর্জিত অনুদান যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের তহবিলে।

এইচএস/এএইচ/এমএস