আজকের শিশুরাই আগামীদিনে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী থেকে শুরু করে বড় বড় বিজ্ঞানী, খেলোয়াড়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হতে পারবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবা-মা, অভিবাবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমামদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকলেই একটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন আপনাদের শিশুরা যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বা মাদকাসক্তিতে আসক্ত না হয়।
Advertisement
সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
লাল পাড়ের সবুজ শাড়ি পরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সঙ্গে সঙ্গে সকলে একযোগে পরিবেশন করেন জাতীয় সঙ্গীত।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালে মো. ফেরদৌস খান।
Advertisement
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্য বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল, যেটা জাতীর পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশের সব মানুষ উন্নত জীবন পাবে, সুন্দর জীবন পাবে এবং ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে সুযোগ পেয়েছিলেন। আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে মর্যাদা তিনি দিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুঃখের বিষয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্য করা হয়। আমি এবং আমার ছোট বোন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলাম। ৬ মাস আমরা রিফিউজি হিসেবে বিদেশে থাকি। এরপর ১৯৮১ সালে আমি বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ পাই, তখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করে।
বাংলাদেশে আসার পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ ঘোঁচানো, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তোলা, আর আমাদের ছোট শিশু-কিশোরদের উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই দীর্ঘদিন কাজ করি। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে অনেক উন্নয়ন করি। ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা করি। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ- বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার কমেছে। আমাদের শিশুদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি। প্রায় ২ কোটি ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে আমরা বৃত্তি দিচ্ছি। ১ কোটি ৩০ লাখ মা মোবাইলের মাধ্যমে বৃত্তির টাকা পাচ্ছে। আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করে দিচ্ছি। আজকের শিশুই তো আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজকের শিশুরাই আগামীদিনে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী থেকে শুরু করে বড় বড় বিজ্ঞানী, খেলোয়াড় ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হতে পারবে। আমরা সেই কামনাই করি।
Advertisement
স্বাধীনতার উদ্দেশ্যই হলো বাংলাদেশ হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এখন আমাদের উদ্দেশ্য এই বাংলাদেশকে বিশ্ব সভায় মর্যাদার আসনে নিয়ে আসা। ইতোমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হতে পেরেছি। কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথানত না করে আমরা মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে চলবো- বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন দিয়ে পড়া-লেখা করবে, বাবা-মা’র মুখ উজ্জ্বল করবে, শিক্ষকদের কথা মেনে চলবে। আর এই দেশকে গভীরভাবে ভালোবাসবে। এই দেশকে আগামীদিনে গড়ে তুলবে। আমরা যেখানে রেখে যাবো সেখান থেকে আগামীদিনে তোমরাই দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যাবো। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত। ২০২০ সালে আমাদের মহান নেতা জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে জন্ম শতবার্ষিকী পালন করবো। আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। ইনশাল্লাহ সেই দেশ আমরা গড়ে তুলবো।
এমএএস/এসএইচএস/জেআইএম