জাতীয়

নির্মমতা ফুটে উঠেছে ইনস্টলেশন আর্টে, শ্রদ্ধাঞ্জলি শহীদের

প্রবেশ পথেই রক্তাক্ত মরদেহ। ভেতরে এগিয়ে যেতে চোখে পড়ে আরও অসংখ্য নিথর দেহের। দেহগুলো থেকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিভিন্ন অঙ্গ। এসব দেখে যেন আর্তনাদ করতে করতে মৃত্যু হয়েছে অনেক স্বজনেরও। তবে সব মরদেহই একটিই বার্তা দিচ্ছে -মুক্তি আর সংগ্রামের।

Advertisement

রক্তাক্ত এসব মরদেহ অবশ্য প্রতীকী। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাত স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে এমন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তবে যে চিত্র ফুটে তোলার চেষ্টা হয়েছে বাস্তবে তার থেকেও বেশি ছিল।

সেদিনের (২৫ মার্চ) কালরাতে পাক বাহিনীর নির্মমতার শিকার হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রক্তাক্ত হয়েছিল তৎকালীন ইকবাল হল (শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ও জগন্নাথ হল। তাই তো প্রতি বছর ২৫ মার্চ দিনব্যাপী শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। প্রার্থনা, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এ শ্রদ্ধা জানানো হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে জগন্নাথ হলেই চলে এসব আয়োজন।এ বছর সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছিল কালরাত স্মরণে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত জ্বলবে না রাষ্ট্রের কোনো বাতি। পালন করা হবে ব্ল্যাক আউট। থেমে থাকবে গাড়ি, সর্ব সাধরণ দাঁড়িয়ে স্মরণ করবে শহীদদের। জগন্নাথ হলেও এ কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে প্রতি বছর ১১টা ৫৯ মিনিট থেকে ১২ পর্যন্ত কালরাতের স্মরণে হলটি আলোহীন থাকলেও এবার তা এগিয়ে ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত পালন করা হয়।

হলের সব আলো নিভে এক সঙ্গে। স্তব্ধ হয় চারদিক। এ যেন ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছে প্রিয় জন্মভূমিতে। এক মিনিট পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। জ্বলেছে মোমের বাতি। যে বাতিতে দূর হয় সব আঁধার। অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধান। আর এ আলোতে বাঙালি জেগেছে নতুনভাবে। স্বাধীন সার্বভোম রাষ্ট্রের মালিক হয়ে। এটি ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী র্দীঘ সংগ্রামের পর স্বাধীনতা অর্জনের কথাই স্মরণ করাচ্ছে।

Advertisement

জগন্নাথ হলের এ ব্ল্যাক-আউট ও গণসমাধিতে মোমবাতি প্রজ্বালন ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ কামাল উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম সরকার প্রমুখ। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে শত শত শিক্ষার্থী।রাত ৯টা ৫ মিনিটে মশাল প্রজ্জ্বলন করা হয়, ৯টা ১০ মিনিটে ছিল আলোচনা সভা। আর রাত ১০টায় শোকসংগীত এবং রাত সোয়া ১১ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী।

এদিকে কালরাত স্মরণ ও শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পরপর সংগঠনটি এ কর্মসূচি পালন করে। সকলের হাতে ছিল মোমবাতি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, উপ-গ্রন্হনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাগর হোসেন সোহাগ, সহ-সম্পাদক খাদেমুল বাশার জয় প্রমুখ।

এমএইচ/আরএস/এসএইচএস/জেআইএম

Advertisement