ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে দুই ভাগে বিভক্ত করার সময় বলা হয়েছিল জনগণের দোরগোড়ায় প্রশাসনকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ। সিটি কর্পোরেশন ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর- দুইভাগে ভাগ হয়েছে। দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এখন দায়িত্ব পালন করছেন। আশা করা গিয়েছিল সেবার মান বাড়বে। নগরবাসী তাদের ট্যাক্সের পয়সার একটি প্রতিদান পাবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ধুলো-দূষণ থেকে শুরু করে এমন কোনো দুর্ভোগ নেই যা নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে না। গ্রীষ্ম মৌসুমে সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে মশার উপদ্রব। লোকজন অতিষ্ঠ মশার অত্যাচারে। রাজধানীর অনেক স্থানেই দিনেদুপুরেই মশার উৎপাতে মশারি লাগিয়ে অথবা মশা মারার কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান প্রয়োজন।
Advertisement
মশা নিধনে বছর বছর বরাদ্দ বাড়াচ্ছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি)। তবে, বরাদ্দ বাড়লেও মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই মিলছে না নগরবাসীর। উপরন্তু বরাদ্দ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মশার উপদ্রব। বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল থেকে শুরু করে চলন্ত গাড়িতেও মশার কামড় বাড়ছে। মশারি, কয়েল কিংবা ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়েও মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মশানাশক স্প্রে করেও মিলছে না প্রতিকার। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য ৫ থেকে ৬ জন করে কর্মী নিযুক্ত আছেন। তারা দিনে দুবার ওষুধ ছিটানোর কাজ করেন। তবে সিটি কর্পোরেশন এমন দাবি করলেও নগরবাসী তাদের দেখতে পান কালেভদ্রে।
মশা নিধন কার্যক্রমের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) চলতি অর্থবছরে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বাজেট নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মশক নিধনে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ডিএসসিসিতে মশার ওষুধ ছিটানোর ৯৪০টি মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে হস্তচালিত, ফগার ও হুইল ব্যারো মেশিন কিন্তু অর্ধেক মেশিনই প্রায় অচল রয়েছে। অন্যদিকে ডিএনসিসিতে হস্তচালিত, ফগার, হুইল ব্যারো, ভ্যাহিক্যাল মাউন্টেড ফগার মেশিন মিলিয়ে মশা নিধনের মেশিন রয়েছে ৬৫৩টি। এর মধ্যেও প্রায় অর্ধেক নষ্ট। সব মিলিয়ে রাজধানীর মশা নিধনে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন। যা দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলছে।
মশা মারার জন্য কামান লাগে না কিন্তু এ খাতে বরাদ্দ নেহায়েত কম নয়। জনবলও অনেক। এর সদ্ব্যবহার করতে পারলে নগরীতে মশা থাকার কথা নয়। এরপরও কিভাবে থাকে সেটিই দেখার বিষয়। আসলে দুই সিটি কর্পোরেশনকে দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু মুখের কথায় কাজ হবে না। নগরবাসী কাজ দেখতে চায়। মশার উপদ্রব বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আমরা আশাবাদী।
Advertisement
এইচআর/এমএস