জাতীয়

সবার আন্তরিকতার কারণেই এ অর্জন : প্রধানমন্ত্রী

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হওয়ায় সব শ্রেণি পেশার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Advertisement

তিনি বলেন, এ অর্জনের জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা সরকারে থেকে পথ প্রদর্শক হিসেবে পথ দেখিয়েছি। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করেছেন কৃষক, পেশাজীবী, মেহনতি মানুষ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ। তাদের আন্তরিকতার কারণেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।

জাতিসংঘ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংবর্ধনা দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি পাওয়ায় সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। এ সময় তিনি সেখানে কিছু সময় নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আজম।

Advertisement

সভাপতির বক্তব্যের আগে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র পরিবেশন করা হয়। এরপর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার জাতিসংঘের সুপারিশপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে রাষ্ট্রপতি, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার প্রতিনিধি, সংসদের বিরোধী দলের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতির মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার পথে দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, বাংলার মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আজ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হওয়ার মাধ্যমে সেটাই প্রমাণ হয়েছে, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাই মিলে কাজ করেছেন বলেই আমরা ৭.২৮ ভাগে প্রবৃদ্ধি উন্নীত করতে পেরেছি। জনগণের মাথাপিছু আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করেছে, উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো এগিয়ে এসেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই দেশকে এগিয়ে নিতে পেরেছি। সে জন্য প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ নানা কারণে রাজনীতি করে। কেউ রাজনীতি করে নিজের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য, সমৃদ্ধ জীবনের জন্য। আমি রাজনীতি শিখেছি বাবার কাছ থেকে, জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন করতে। আমার বাবা চেয়েছিলেন দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হলে, মানুষ সুখে থাকলে বাবার আত্মা শান্তি পাবে। বাবার এ চাওয়াটা পূরণ করতেই আমার রাজনীতি।

Advertisement

শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর পর ৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় এসে মানুষের জন্য কাজ শুরু করি। পাঁচ বছরেই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। কিন্তু ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারিনি। বিরোধী দলে থাকলেও আমরা বসে থাকিনি। আবার ক্ষমতায় গেলে কি করবো সে জন্য আজকের অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে তখন একটি কমিটি গঠন করি। এ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আমরা নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করি।

দেশের এ যোগ্যতা অর্জনে আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বে গঠিত সরকারের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকার গঠনের পর বেশি গুরুত্ব দিই গ্রামের দিকে। তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করি। এর পাশাপাশি খাদ্য কর্মসূচি, বাসস্থানের জন্য গুচ্ছগ্রাম, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি ঢাকার বস্তিগুলোর দিকেও নজর দেই। বস্তির মানুষগুলোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ব্যবস্থা করে দিই। তাদের জীবন যাত্রার উন্নয়নে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করি। দেশের নারী ও শিশুদের দিকে লক্ষ্য রেখে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করি। ফলে দেশে শিশু মৃত্যুর হার কমে আসে।

এফএইচএস/এএইচ/পিআর