জাতীয়

সরকারি চাকুরেদের বর্ণিল শোভাযাত্রা

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি উদযাপনের অংশ হিসেবে বর্ণিল শোভাযাত্রা করেন সরকারি চাকরিজীবীরা। রাজধানীর ৯টি স্পট থেকে নির্ধারিত পথ ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শোভাযাত্রা নিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে আড়াইটা থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা নিয়ে বিকেল ৫টার মধ্যে প্রায় সবাই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন।

৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ সংস্থার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় দেখা গেছে সুসজ্জিত বাদকদল, ঘোড়ার গাড়ি। শোভাযাত্রায় বিশাল ব্যানার নিয়ে গায়ে বর্ণিল টি-শার্ট, মাথায় ক্যাপ দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছিল ফেস্টুন। টি-শার্ট, ক্যাপ, ব্যানারে শ্লোগান ছিল- ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ।’

শোভাযাত্রাসহ সরকরি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছেন। বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেয়া হয়।

Advertisement

শোভাযাত্রার ফেস্টুনে ছিল সরকারের উন্নয়নের নানান শ্লোগান- ‘সকল সূচকের উন্নয়নে বিশ্বে রোল মডেল বাংলাদেশ’, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের অভিযাত্রায় বাংলাদেশ’, ‘টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার অর্জনের পথে বাংলাদেশ’, ‘ডিজিটাল যুগ, জনগণের সুখ’, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’, ‘হাতে রেখে হাত, উন্নয়নের ডাক’, ‘স্বপ্ন পূরণের উৎসবে আজ দেশ’, ‘বাংলাদেশ আজ দুর্বার, রুখবে তাকে সাধ্য কার’ ইত্যাদি।

কোনো কোনো দফতরের শোভাযাত্রায় মাইক ও স্পিকারে বেজেছে গান। শোভাযাত্রা থেকে ‘জয়বাংলা’ শ্লোগানও শোনা যায়। শোভাযাত্রা উপলকক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমবেত হওয়ার ৯টি স্পট ও শোভাযাত্রার রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্টেডিয়ামের আশেপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের তৎপর দেখা গেছে। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে তল্লাশিসহকারে একজন একজন করে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করানো হয়।

স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় লেজার শো ফায়ারওয়ার্কসহ ২-৩ ঘণ্টার একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানটি সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

Advertisement

বাংলা একাডেমি ও সংলগ্ন এলাকা, শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস্য ভবন সংলগ্ন এলাকা, শিশু একাডমি ও দোয়েল চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ ও সংলগ্ন এলাকা, নগর ভবন, বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর, রমনা পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ এবং শিল্প ভবন চত্বর এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হয়ে শোভাযাত্রা নিয়ে স্টেডিয়ামের দিকে আসছেন। এসব এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

কোন পয়েন্টে কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হয়ে কোন রুট দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবেন তাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।

শোভাযাত্রা উপলক্ষে সকাল থেকেই সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ছিল ছুটির আমেজ। অফিসে এসে শোভাযাত্রার আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। অনেককে শোভাযাত্রার গেঞ্জি গায়ে সচিবালয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা অফিসে আসেননি বলেও গেছে।

দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্ধারিত স্পটের দিকে পায়ে হেঁটে যেতে থাকেন।

র‌্যালির গতিপথবাংলা একাডেমি ও সংলগ্ন এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সেতু বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সমবেত হন।

তারা বাংলা একাডেমি, দোয়েল চত্ত্বর, আব্দুল গণি রোড, জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট দিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন।

শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস ভবন সংলগ্ন এলাকায় সববেত হন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তারা র্যালি নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি, মৎস ভবন, কদম ফোয়ারা, প্রেস ক্লাব, পল্টন, বাইতুল মোকাররম, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর গেট (মশাল গেট) দিয়ে প্রবেশ করেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শিশু একাডেমি ও দোয়েল চত্ত্বর সংলগ্ন এলাকায় সমবেত হন।

তারা শিশু একাডেমি, আব্দুল গণি রোড, জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট দিয়ে প্রবেশ করেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের লোকজন জড়ো হন। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, মৎস ভবন, কদম ফোয়ারা, প্রেস ক্লাব, পল্টন হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর গেট (মশাল গেট) দিয়ে প্রবেশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেশিয়াম মাঠ ও সংলগ্ন এলাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর/সংস্থাগুলোর কর্মীরা সমবেত হন। তারা দোয়েল চত্ত্বর, আব্দুল গণি রোড, জিপিও হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পশ্চিম গেট দিয়ে শোভাযাত্রা নিয়ে প্রবেশ করেন।

নগর ভবন এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গোলাপ শাহ মাজার, গুলিস্থান মোড়, রাজউক মোড় হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক চত্ত্বর এলাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সমবেত হয়ে শোভাযাত্রা নিয়ে দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করেছেন।

রমনা পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মৎস ভবন, কদম ফোয়ারা, প্রেস ক্লাব, পল্টন, বাইতুল মোকাররম হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উত্তর গেট (মশাল গেট) দিয়ে প্রবেশ করেন।

শিল্প ভবন চত্ত্বর এলাকায় সমবেত হয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করেছেন।

আরএমএম/এমইউএইচ/এএইচ/এনএফ/জেআইএম