খেলাধুলা

প্রিমিয়ারের সুপার লিগ খেলা হচ্ছে না সাকিব-তামিম-রিয়াদের

রেশ ফুরোয়নি। রয়েই গেছে। নিদাহাস ট্রফির হাত মেলানো দূরত্বে গিয়ে ছুঁতে না পারার বেদনা পোড়াচ্ছে এখনো। আফসোস- অনুশোচনা চারিদিকে। এখনো ওই ফাইনাল নিয়েই যত কথা। হয়তো চলবে আরও কিছু দিন।

Advertisement

তবে কঠিন সত্য হলো, নিদাহাস ট্রফি শেষ। আপাততঃ কোন বিদেশ সফর, সিরিজ , টুর্নামেন্ট কিংবা হোম সিরিজ কিছুই নেই টাইগারদের। তাই এখন সবাই ব্যস্ত ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট মানে প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে।

এদিকে টাইগারররা নিদাহাস ট্রফি শেষে দেশে ফিরতে না ফিরতেই শেষ হয়ে গেছে প্রথম পর্ব। আগামী ২৪ মার্চ থেকে শুরু ছয় দলকে নিয়ে সুপার লিগ।

আগামী শনিবার শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাশরাফি বিন মর্তুজার আবাহনী খেলবে জহরুল-মুমিনুলদের দল গাজী গ্রুপের সাথে।

Advertisement

এখন কোন আন্তর্জাতিক সিডিউল নেই। আইপিএল শুরু হবার এক সপ্তাহরও বেশি সময় আগেই শেষ হয়ে যাবে সুপার লিগ। কারো কোন বড় ধরণের ইনজুরিও নেই যে বিশ্রামে থাকতে হবে। তাই জাতীয় ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণে একটা জমজমাট সুপার লিগের প্রতীক্ষায় ঢাকার ক্রিকেট অনুরাগিরা।

তারপরও ‘কিন্তু ’ আছে। দেশের ক্রিকেটের পাঁচ শীর্ষ তারকা ‘পঞ্চ পান্ডবের’ তিনজন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সম্ভবত এবারের সুপার লিগ খেলা হচ্ছে না। কারণ তাদের তিনজনের দলই সুপার লিগে উঠতে পারেনি। সাকিবের মোহামেডান হয়েছে সপ্তম।

তামিম ইকবালের কলাবাগান ক্রীড়া চক্র পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে থেকে রেলিগেশনে। আর মাহমুদউল্লাহর প্রাইম ব্যাংকও সেরা ছয়ে জায়গা করে নিতে পারেনি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, পিএসএল ও জাতীয় দলের কার্যক্রম ও সফর সূচীতে ব্যস্ত থাকায় এবারের প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচও খেলা হয়নি সাকিব, তামিম ও মাহমুদউল্লাহর।

Advertisement

এর মধ্যে তামিম ও মাহমুদউল্লাহরা যখন নিদাহাস ট্রফি খেলতে কলম্বোয়, তখন সাকিব আঙুলের ইনজুরি সাড়াতে ব্যতিব্যস্ত। ঢাকা, ব্যাংকক আর অস্ট্রেলিয়া করে কেটেছে তার।আর তামিম ও মাহমুদউল্লাহও নিজ নিজ দলের হয়ে দেশ ত্যাগের আগে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকলেও খেলেননি।

প্লেয়ার্স বাই চয়েজে সাকিব সাদা কালো শিবিরে। তামিম কলাবাগান কেসিতে আর মাহমুদউল্লাহ প্রাইম ব্যাংকে নাম লিখালেও তারা একটি ম্যাচও খেলেনি।

এবার তো মিচ্যুয়ালি বা দুই দলের সমঝোতায় দল বদল অনুষ্ঠানের পরও ক্রিকেটারদের ঘর বদলের ঘটনা ঘটেছে। নিয়মও করা হয়েছে। যে নিয়মে মাশরাফি শাইন পুকুর ছেড়ে আবাহনীতে। এনামুল হক বিজয়ও খেলাঘর থেকে আবাহনীতে।

তাহলে সাকিব, তামিম ও মাহমুদউল্লাহরা যেহেতু শুধুৃ কাগজে কলমেই দল বদল করেছেন। কোন ক্লাবের পক্ষে একটি ম্যাচও খেলেননি। প্লেয়ার্স লিস্টে নামই ওঠেনি। তবে কি তারা নিজ নিজ ক্লাবের সাথে কথা বলে সুপার লিগে ওঠা ছয় দলের কারো সাথে সমাঝোতায় যোগ দিতে পারবেন? এমন গুঞ্জনও কিন্তু আছে।

কিন্তু ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের অভিভাবক ও ব্যবস্থাপক সংগঠন সিসিডিএম কো-অর্ডিনেটর আমিন খান জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন, ‘নাহ, এখন আর কেউ শত সমঝোতার ভিত্তিতেও অন্য শিবিরে যোগ দিতে পারবে না। তারও একটা সময় সীমা বেঁধে দেয়া ছিল। এখন আর সেই সময় ও সুযোগ নেই। তাই যারা প্রিমিয়ার লিগ খেলেনি, তাদের কেউ সুপার লিগে কোন নতুন দলে নাম লেখাতে পারবে না। ’

সিসিডিএম কো-অর্ডিনেটরের কথা অনুযায়ী তাই সাকিব, তামিম ও মাহমুদউল্লাহর আর এবারের প্রিমিয়ার লিগে মাঠে নামা হচ্ছে না।

কেউ কেউ হয়তো বলবেন, সাকিব তো আইপিএল খেলতে যাবেন। তাই তার পক্ষে হয়তো সুপার লিগ খেলা এমনিতেও সম্ভব হতো না। কিন্তু সাকিবের কথা শুনে মনে হলো, মোহামেডান সুপার লিগে উঠলে সাকিব ঠিক খেলতেন।

মোহামেডান ম্যানেজার সাকিবের উদ্ধৃতি দিয়ে কদিন আগে জাগো নিউজকে জানিয়েছিলেন যে , কলাবাগানের সাথে শেষ ম্যাচের আগের রাতে সাকিব বলেছেন, মোহামেডান সুপার লিগে উঠলে আমি কয়েকটি ম্যাচ খেলে যাব। সেটা শুধু খেলাই হবে না। আমার আইপিএলের ম্যাচ প্র্যাকটিসও হবে। কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না।

এদিকে ঢাকা তথা সারাদেশে অগণিত সাকিব ভক্তর কৌতুহলি প্রশ্ন, বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার কবে আইপিএল খেলতে ভারত যাবেন? আজ দুপুরে জাগো নিউজের কাছ থেকে এমন প্রশ্ন পেয়ে সাকিব জানান, ‘আগামী মাসের (এপ্রিলের) একদম প্রথম ভাগে মানে এক থেকে দুই তিন তারিখের মধ্যে চলে যাব।’

এদিকে ২৪ মার্চ শুরু হওয়া সুপার লিগ শেষ হবে এপ্রিলের ৫/৬ তারিখের দিকে। তার মানে মোহামেডান সুপার লিগে উঠলে সাকিব অন্তত গোটা তিনেক ম্যাচ খেলতে পারতেন।

এআরবি/এমএমআর/জেআইএম