জাতীয়

নতুন ভোটার হবে ৭২ লাখ

দেশব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথমবারের মতো অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নাম নিবন্ধনের মধ্য দিয়ে শনিবার নরসিংদী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এরপর নরসিংদী পৌরসভার একটি বাসায় নিজে উপস্থিত থেকে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সিইসি। তার উপস্থিতিতেই মেহেদী মোবারক (১৬), ফাতেমা শারমিন (১৭) ও ফারজানা আহমেদ নামে তিন তথ্যদাতার তথ্য সংগ্রহ করেন ইসির তথ্যসংগ্রহকারী। এ সময় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু, নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান, জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার সুলতানুজ্জামান মো. সালাহ উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান, জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান, পুলিশ সুপার আমেনা বেগমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।আগামী বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ৫১৪টি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে ভোটার নিবন্ধন চলবে। প্রথম পর্যায়ে দেশের প্রায় ২০০ উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। যাদের জন্ম ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে (১৫ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত) হালনাগাদ কার্যক্রমে কেবল সেই সব নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তবে বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারা ভোটার হিসেবে গণ্য হবেন। এ কার্যক্রমে প্রায় ৭২ লাখ নতুন ভোটারযোগ্য নাগরিককে নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।সঠিক তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীকেই সতর্ক হতে হবে। যেন কোনো ভুল না হয়। তাই সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে হবে। যারা একবার ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন, তাদের আর তালিকায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। হালনাগাদের সময় মৃতদের বাদ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, শিগগিরই নাগরিকদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। এতে নাগরিকরা সহজেই রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ সময় নারীদের বেশি করে তালিকায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে সবাইকে আরও গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। প্রয়োজনে প্রচারণার মাধ্যমে বেশি বেশি করে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বলেন। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনে নির্লজ্জভাবে জালভোট হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা ছবিসহ ভোটার তালিকা এ জালভোট প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সবার স্মার্ট কার্ড হয়ে গেলে নির্বাচনের পরে ইসির ওপর কালিলেপন বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন একশভাগ নিরপেক্ষ। কেননা, প্রতিটি নির্বাচনে তারা মেধা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে।চলতি বছরের ১ এপ্রিলের ডাটাবেজ অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ভোটারের সংখ্যা ৯ কোটি ৬২ লাখ ২৬ হাজার ৫৪২ জন। ৭২ লাখের বেশি নতুন নাগরিককে টার্গেট করে এ কাজটি শুরু করতে যাচ্ছে ইসি। সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে ১৮ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে প্রথমে ছবিযুক্ত ভোটার প্রণয়ন শুরু হয়। ইতোমধ্যে ২০১০, ২০১২ ও ২০১৪ সালে তালিকা হালনাগাদ হয়েছে। এ বছর চতুর্থ দফায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এইচএস/এমআরআই

Advertisement